বরিশালে ৭১ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা

নিজস্ব প্রতিবেদক
এইচ.এম.এ রাতুল, জেলা প্রতিনিধি, বরিশাল।
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২১শে ডিসেম্বর ২০২১ ১০:২৬ অপরাহ্ন
বরিশালে ৭১ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা

বরিশালে চলতি রবি মৌসুমে প্রায় ৭১ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রায় ১৫ লক্ষাধিক টন শীতকালীন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যে মাঠে কাজ করছেন কৃষকরা। ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ২৮ হাজার হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ সম্পন্ন হওয়ায় ধীরে ধীরে বাজারে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। তবে দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় বরিশাল কিছুটা নিচু হওয়ার পাশাপাশি বর্ষা বিলম্বিত হওয়ায় জমিতে পানি আটকে রয়েছে। জমিতে অতিমাত্রায় আদ্রতা বিরাজ করায় রবি ফসলের আবাদও বিলম্বিত হয়। পাশাপাশি বিলম্বিত বর্ষার কারণে এ অঞ্চলের প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আমন ধান উঠতেও বিলম্ব ঘটায় শাক-সবজিসহ রবি ফসল আবাদও বিলম্বিত হয়ে থাকে।


কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি রবি মৌসুমে বরিশালে প্রায় ১২ লাখ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফসল আবাদ হচ্ছে। এর মধ্যে শুধু সাড়ে ৩ লাখ হেক্টরে বোরো ধান আবাদের মাধ্যমে ১৫ লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে। অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকা হওয়ায় এখানো শুধুমাত্র বীজতলা তৈরির লক্ষ্যে মাঠে কাজ শুরু করতে যাচ্ছে কৃষকরা।


তবে বরিশাল অঞ্চলের কৃষকরা এখন ব্যস্ত রয়েছে শীতকালীন সবজি আবাদে। চলতি রবি মৌসুমে কৃষি মন্ত্রণালয় দেশে ৯ লাখ ৪৮ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদের মাধ্যমে ২ কোটি ১৯ হাজার টন শীতকালীন সবজি উৎপাদন লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে শুধু বরিশাল কৃষি অঞ্চলেই প্রায় ৭১ হাজার হেক্টরে আবাদের মাধ্যমে ১৫ লক্ষাধিক টন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যে কাজ করছেন কৃষকরা। লাল শাক, পালং শাক, সিম, পটল, ফুলকপি, বাধা কপি, শালগম, গাজর, মুলাসহ বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজি বাজারে আসছে। তবে এর বাইরে লাউসহ বেশ কিছু সবজি যা বার মাসই আবাদ ও উৎপাদন হচ্ছে, তাও বাজারে রয়েছে।


কিন্তু শীতকালীন সবজি আবাদ বিলম্বিত হওয়ায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সবজি বরিশাল অঞ্চলের বাজারে আসছে। ফলে পরিবহন ব্যয়জনিত কারণে দামও কিছুটা চড়া। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সবজি বাজারে আসতে শুরু করলে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছেন বরিশালের পাইকারি সিটি মার্কেটের সবজির আড়তদাররা।


কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দায়িত্বশীল সূত্রের মতে, দেশে গত বছর ১ কোটি ৯৭ লাখ ১৮ হাজার টনের মত শীতকালীন সবজি উৎপাদন হয়েছে। এ বছর তা ২ কোটি টনের ওপর হওয়ার কথা। এতে করে অভ্যন্তরীণ বাজারের পূর্ণ চাহিদা মিটিয়েও বিদেশে রফতানি বাজার আরো সম্প্রসারিত হবে। আগামীতে এ বাজার আরো সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সরকার দেশে সবজির আবাদে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আসছে।


বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কৃষি প্রকৌশলী মোঃ মশিউর রহমান জানিয়েছেন, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বারী মাঠ পর্যায়ে গবেষণা কার্যক্রমের মাধ্যমে অন্যসব ফসলের মত বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজিরও উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছে। ফলে কম জমিতে অধিক ফসল উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। এতে করে একদিকে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন, অপরদিকে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি বাজার সম্প্রসারণের সুযোগ ঘটছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।