আশাশুনির আম ব্যবসায়ীদের রক্ষার আকুতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
সচ্চিদানন্দদেসদয়, আশাশুনি উপজেলা প্রতিনিধি, সাতক্ষিরা
প্রকাশিত: বুধবার ২৬শে এপ্রিল ২০২৩ ০৫:৫৯ অপরাহ্ন
আশাশুনির আম ব্যবসায়ীদের রক্ষার আকুতি

বিগত বছরে চরম ক্ষতিগ্রস্ত আশাশুনি উপজেলার আম ব্যবসায়ীরা এবছর পুঁজিসহ ব্যবসা ধ্বংসের হাত থেকে রাক্ষার্থে জেলা প্রশাসকের কাছে আকুল আকুতি জানিয়েছেন। দেশের সম্মান রক্ষাসহ মানুষের মুখে স্বাস্থ্য সম্মত আম তুলে দিতে সততার সাথে ব্যবসা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য তারা যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহনে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) সকালে উপজেলার বুধহাটা করিম সুপার মার্কেটে আম ব্যবসায়ী সভায় তারা এ আকুতি জ্ঞাপন করেন।

 

আশাশুনি উপজেলার প্রাণ কেন্দ্র বুধহাটা এলাকা সংশ্লিষ্ট আম ব্যবসায়ীদের উপস্থিতিতে সভায় বক্তব্য রাখেন, ব্যবসায়ী ইদ্রিস আলী, রেজাউল করিম, কবির হোসেন, আজহারুল ইসলাম প্রমুখ। বক্তাগণ বলেন, গত বছর ঘূর্ণিঝড়সহ নানা কারনে আম নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আমরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পূঁজি হারিয়েছিলাম। এক বছর ধরে আমরা জমি বন্ধন দিয়ে ও ব্যাংক-এনজিও থেকে ঋণের টাকা ব্যয় করে সেচসহ পরিচর্চার মাধ্যমে প্রচুর আমের ফলন ফলাতে সক্ষম হয়েছি। 


ব্যাপক তাপমাত্রা ও লবণাক্ততার কারনে এবং আশাশুনির প্রেক্ষাপটে অগ্রিম জাতের অনেক গাছের আম পেকে গেছে। বিশেষ করে গোলাপ খাস, শরীফ খাস, বেল খাস, গোবিন্দ ভোগ, গোপাল ভোগ ও বিভিন্ন প্রজাতির আটির আম, বৈশাখী আম পেকে গেছে। বাদুড়ে আম খেয়ে যাচ্ছে, পাকা আম পড়ে নষ্ট হচ্ছে। 


এসব আম এখনই পেড়ে বাজারজাত, আড়তজাত করা জরুরী হয়ে পড়েছে। সদাশয় জেলা প্রশাসন গত বছর ১ মে অগ্রিম জাতের আম ও ৫ মের পর থেকে হিমসাগর আম বাজারজাত করার সময় বেধে দিয়েছিলেন। কিন্তু এবছর ১১ দিন পিছিয়ে ১২ মে স্থানীয় জাতের, ২০ দিন পিছিয়ে ২৫ মে হিমসাগর/ক্ষীরসাপাতি, ১ জুন ল্যাংড়া ও ১৫ জুন থেকে আ¤্রপালি আম পাড়ার সময় নির্দ্ধারন করা হয়েছে। কাল বৈশাখীর ছোবলে পড়লে গাছের অগ্রিম জাতের পাকা আম নষ্ট হয়ে যাবে।

 

ব্যবসায়ীরা অনুনয়ের সাথে দাবী করেন, অগ্রিম জাতের আম পেকে গেছে। এসব আমগুলো প্রশাসনের তদারকিতে ব্যবসায়ীদেরকে গত বছরের সময় মত ১ মে থেকে পাড়ার অনুমতি দেওয়া হোক। তারা প্রশাসনের অবগতির মাধ্যমে তাদের সরেজমিন উপস্থিতিতে আম পেড়ে আড়ৎজাত করতে চায়। রাসায়নিক দ্রব্য তারা সম্পূর্ণভাবে ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা প্রদান করে বলেন, ৩ মাস আগে গাছে মুকুল এসেছিল, পরবর্তীতে আরও ২ বার মুকুল এসেছে। প্রথম মুকুল আসা গাছের আম পেকে গেছে। অপরপিক্ক জাতের আম তারা যথারীতি বিলম্বে পাড়তে চায় এবং বিদেশে রপ্তানীযোগ্য করে বাজারজাত করতে চায়। তারা জেলা প্রশসক মহোদয়ের কাছে সদয় দিকনির্শেনার আদেবন জানিয়ে বলেন, পাকা আম পাড়তে না দিলে ব্যবসায়ীরা বিগত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবং এবছরের লাভের মুখ দেখতে পারবেনা। 


আশাশুনি উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ এস এম এনামুল ইসলাম জানান, সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে তারা যথাসাধ্য কাজ করে যাচ্ছেন। ব্যবসায়ীদের কোম্পানীর সাথে চুক্তি থাকলে চুক্তিপত্র দেখাতে হবে, অগ্রিম পেকে যাওয়া আম পাড়তে হলে আড়তদারের সাথে আমাদের যোগাযোগ করাতে হবে। তখন উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সরেজমিন পাঠিয়ে সঠিক চিত্র পর্যবেক্ষণ করে বিশেষ ব্যবস্থাধীনে আম পাড়ার ব্যবস্থা করা হবে। যাতে চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত না হন সেদিক বিবেচনা করা হবে। তবে কোন ভাবেই অপরিপক্ক আম পাড়া বা রাসায়নিক দ্রব্য মিশানোর মাধ্যমে আম পাকানোর সুযোগ দেওয়া হবেনা বলে তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।