প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১০:৩৯
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় রতুলী-আরএইচডি-আজিমগঞ্জ এলজিইডি রাস্তায় পুনর্বাসন কাজ শুরু হয়েছে মাত্র কয়েক মাস হলেও বিভিন্ন স্থানে রাস্তা দেবে গেছে এবং পিচ উঠে অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজের মান নিশ্চিত করেনি এবং অনেক স্থানে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও উপকরণ ব্যবহার করা হয়নি।
প্রায় ছয় মাস আগে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের বরাদ্দের সিংহভাগ অর্থ ১ কোটি ৬০ লাখ ৯৮ হাজার টাকা উত্তোলন করেছে। কাজের তিন মাস না যেতেই সিলকোটের পাথর উঠে যাচ্ছে এবং স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, ঠিকাদার সঠিক নিয়ম মেনে কাজ করেননি। এ ব্যাপারে মুহিবুর রহমান কুকিল জানান, রাস্তায় গর্ত ও দেবে যাওয়ার তথ্য তাকে আগে জানানো হয়নি, তবে কাজ চলমান রয়েছে এবং মেয়াদের মধ্যে অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করা হবে।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘ কয়েক বছর সংস্কার না হওয়ায় রাস্তাটি ক্ষয়প্রাপ্ত ছিল। ২০২২ সালের বন্যায় রাস্তাটির কিছু অংশ তলিয়ে ভেঙে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। দেশ-বিদেশে আগর-আতরের রাজধানী খ্যাত সুজানগর ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়েছিলেন। জনসাধারণ ও জনপ্রতিনিধিরা নিজ উদ্যোগে ইট-বালু ও মাটি দিয়ে ভরাট করলেও ভারি বৃষ্টিপাত ও যানবাহনের চাপের কারণে তা বেশি টেকসই হয়নি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ ২০২৩ সালে ‘বন্যা ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ রাস্তা অবকাঠামো পুনর্বাসন’ প্রকল্পের আওতায় রাস্তাটির প্রায় ৩ কিলোমিটার সংস্কারের জন্য ২ কোটি ৭৭ লাখ ৮৮ হাজার ৯৭ টাকা বরাদ্দ দেয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মুহিবুর রহমানকে কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
রাস্তার মেগাডম, কার্পেটিং ও সিলকোটের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের ২৩ অক্টোবর। জানুয়ারিতে কাজ শেষ হলেও কয়েক মাসের মধ্যেই বিভিন্ন স্থানে পিচ উঠে যাওয়া এবং গর্তের সৃষ্টি লক্ষ্য করা যায়। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, বিটুমিন না ব্যবহার করে কেরোসিনের গন্ধযুক্ত পদার্থ ছিটিয়ে ভরাট করা হয়েছে, যার ফলে রাস্তার গুণগত মান নিম্নমুখী হয়েছে।
আতর ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুস এলাকাবাসীর পক্ষে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। ইউএনও গালিব চৌধুরী জানিয়েছেন, তিনি সংশ্লিষ্ট রাস্তায় অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েছেন এবং তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশ দিয়েছেন।
স্থানীয়রা আশা করছেন, দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং রাস্তার পুনর্বাসন প্রকল্প সম্পন্ন হলে জনগণের চলাচলের সমস্যা দূর হবে।