প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১৭:৪২
মাদারীপুরের ডাসারে সরকারি খাল উদ্ধারের প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করেছেন ডাসার ইউনিয়ন পরিষদের নৌকা মার্কার চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিম ভাসাই সিকদার। দীর্ঘদিন ধরে সরকারি খালটি অবৈধভাবে ভরাট করে পাকা ভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করেছিলেন সাবেক উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ বেলায়েত হোসেন। স্থানীয়দের উদ্যোগে খাল উদ্ধারের প্রচেষ্টা এবং মানববন্ধনের পর উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার খাল পরিমাপ করে সীমানা নির্ধারণ করেন।
উচ্ছেদ কার্যক্রমের জন্য প্রস্তুতি চলাকালীন চেয়ারম্যান রেজাউল করিম ভাসাই সরকারি খাল উদ্ধারের তারিখ পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেন। এই আবেদনের কারণে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা মনে করছেন, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া চেয়ারম্যানের পদ ও ক্ষমতার অপব্যবহার হিসেবে ধরা যায়।
স্থানীয় বাজার কমিটি জানিয়েছে, ২০১০ সাল থেকে তারা সরকারি খাল উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। বিভিন্ন সরকারি সার্ভেয়ার খাল পরিমাপ ও সীমানা নির্ধারণ করেছিলেন। তবে সাবেক এমপি ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাছিম দলের ক্ষমতার প্রয়োগ করে উচ্ছেদ প্রক্রিয়া বন্ধ করেছিলেন।
এলাকার সচেতন মহল জানান, চেয়ারম্যান হিসেবে স্থানীয় সরকারের একজন প্রতিনিধি প্রশাসনের কাজে বাঁধা দেওয়া উচিৎ নয়। সরকারি খাল ও রাস্তা উদ্ধারের কাজে বাধা সৃষ্টি করে তিনি সরকারি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করেছেন। এছাড়া তিনি গোপনে পালিয়ে যাওয়া সরকারের দোষরদের নিয়ে বৈঠক করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ডাসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সাইফ উল আরেফীন বলেন, চেয়ারম্যান একটি আবেদন জমা দিয়েছেন। তিনি খালের পরিমাপ ও উচ্ছেদ কার্যক্রম পুনঃনির্ধারণের জন্য ডিসেম্বর বা জানুয়ারি মাসের সময় উল্লেখ করেছেন। তবে প্রশাসন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
স্থানীয়রা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, সরকারি সম্পদ রক্ষা ও প্রশাসনিক নিয়ম নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে প্রশাসনকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে, সরকারি কাজের বাধা সৃষ্টি এবং স্থানীয় ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।
এলাকাবাসি আশা করছেন, সরকারি খাল উদ্ধারের উদ্যোগ সফল হবে এবং স্থানীয় প্রশাসন অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে। খাল উদ্ধারের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষা ও স্থানীয় জনগণের স্বার্থ রক্ষা সম্ভব হবে।