হিলি স্থলবন্দরে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক
গোলাম রব্বানী, উপজেলা প্রতিনিধি হিলি (দিনাজপুর)
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১০ই মে ২০২২ ০৫:৪৩ অপরাহ্ন
হিলি স্থলবন্দরে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ

ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির জন্য সরকারি অনুমতি (আইপি) ইমপোর্ট পারমিটের মেয়াদ শেষ হওয়ায় নতুন করে (আইপি) ইমপোর্ট পারমিট না পাওয়ায় দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ বন্ধ রয়েছে। দেশীয় কৃষকের স্বার্থ বিবেচনায় সরকার পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রেখেছে। তবে আমদানি বন্ধ থাকায় ঈদের পরে এই পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে।


হিলি স্থলবন্দর কার্যালয়ের তথ্য মতে, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির সরকারি অনুমতি (আইপি) ইমপোর্ট পারমিট অনুযায়ী চলতি বছরের সর্বশেষ ৩০ এপ্রিল ৬৮টি ট্রাকে এক হাজার ৯০২ টন পেঁয়াজ ভারত থেকে এই বন্দরে এসেছে । এরপর পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে ৭ মে (শনিবার) এই বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি শুরু হলেও এখন পর্যন্ত ভারত থেকে পেঁয়াজ আসেনি। এদিকে ঈদের আগে বন্দরে পেঁয়াজ ১৪/১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে ২০ থেকে ২২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।


বন্দরে পেঁয়াজ কিনতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, ঈদের আগে হিলির আমদানিকারকদের গুদাম থেকে পেঁয়াজ কিনে নিয়ে গেলাম ১৪ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে। ঈদের পর কিনতে এসে শুনি দাম বেড়েছে। এখন দাম চাচ্ছে ২০ থেকে ২২ টাকা কেজি। দাম বাড়ার কারণে পেঁয়াজ কেনা আমাদের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা যেখানে ২০ টাকা কেজি খুচরা বিক্রি করেছি, সেখানে আমাদেরই এখন ২০-২২ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে। 


বন্দরে পেঁয়াজ আমদানিকারক এর প্রতিনিধি মাহাবুব আলম বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির জন্য পাওয়া ইমপোর্ট পারমিটের (আইপি) মেয়াদ ছিল চলতি মাসের ৫ মে পর্যন্ত। কিন্তু পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১ মে থেকে ৬ মে পর্যন্ত ছয় দিন হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বন্ধ ছিল। একইভাবে দেশের অন্য বন্দর দিয়েও এ সময় আমদানি আসেনি। এ কারণে ওই সময়ের মধ্যে বাড়তি পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানির ইচ্ছা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। সরকার নতুন করে ইমপোর্ট পারমিট না দেওয়ায় বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আসছে না। আমরা ইতোমধ্যে পেঁয়াজ আমদানির জন্য অনুমতি চেয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করেছি। ঈদুল আজহায় পেঁয়াজের চাহিদাকে মাথায় রেখে সরকার দ্রুত পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিলে বাজার স্থিতিশীল থাকবে বলে জানান এই আমদানিকারক এর প্রতিনিধি। 


হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুনুর রশীদ বলেন, গত ২৯ মার্চ পেঁয়াজ আমদানির আইপি অনুমোদন শেষ হলেও রমজান মাসে বাজার স্বাভাবিক রাখতে সরকার ওই দিনই আবার আমদানির অনুমতি বাড়িয়ে দেয় ৫ মে পর্যন্ত। অর্থাৎ ভারত থেকে গত ৫ মে পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত ছিল। তখন আড়তগুলোতে পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ ছিলো যারফলে পেঁয়াজ আমদানিতে তেমন গুরুত্ব দেয়নি আমদানি কারকরা। তবে বর্তমানে বাজারে পেঁয়াজের দাম একটু বেড়েছে। তবে নতুন করে সরকারি অনুমতি পত্র ( আইপি) ইমপোর্ট পারমিট পেলে পুনরায় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হবে। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বাজারে দাম বাড়বে বলে আমার মনে হয় না। 


হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বলেন, গত ২৯ মার্চ পেঁয়াজ আমদানির ইমপোর্ট পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়। সে সময় রমজানে দেশে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সময় বাড়িয়ে ৫ মে পর্যন্ত নির্ধারণ করেছিল কর্তৃপক্ষ। নতুন ইমপোর্ট পারমিট না মেলায় আমদানি বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ আবার তা চালু হবে সে বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না।   


হিলি স্থলবন্দরের পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ভারত থেকে পেঁয়াজ এসেছে। এরপর বন্দর দিয়ে কোনও পেঁয়াজ আমদানি হয়নি।