ঈদ কার্ড ছাড়াই ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি!

নিজস্ব প্রতিবেদক
আব্দুল কাদের, উপজেলা প্রতিনিধি, কালিগঞ্জ, সাতক্ষীরা
প্রকাশিত: বুধবার ২৭শে এপ্রিল ২০২২ ০৮:৪০ অপরাহ্ন
ঈদ কার্ড ছাড়াই ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি!

ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। মুসলিমদের প্রধান উৎসব ও আনন্দের দিন পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। ঈদের আনন্দ উপভোগ করার জন্য ধনী-গরীব ছোট-বড় সকল শ্রেণী পেশার মানুষ ভেদাভেদ ভুলে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করে থাকে। এক সময় দেখা যেত ঈদ এলেই ভাই বোন আত্মীয়-স্বজন ও প্রিয় জনকে ঈদ কার্ড দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন। প্রিয়জনদের কাছ থেকে ঈদ কার্ড পাওয়ার প্রতীক্ষায় থাকতেন অনেকেই। 


বর্তমান সময়ে ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ, এসএমএস সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের কারণে বিলুপ্তির পথে ঈদ কার্ড। ১০ থেকে ১২ বছর আগেও ঈদ কার্ডের প্রচলন ছিল। ঈদের পোশাক ও প্রসাধনীর সাথে ঈদ কার্ড কেনার জন্য ভিড় জমাতো বিভিন্ন মোদী দোকান ও লাইব্রেরী গুলোতে। ঈদ কার্ড ছিল আবেগ, অনুভূতি ও ভালোবাসার নাম। ঈদ কার্ড ছাড়া ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করাটা যেন চিন্তাই করা যেতো না। সেই সময় রমজান এলে জমে উঠতো ঈদ কার্ডের বাজার।


কার্ডগুলোতে শোভা পেত মসজিদ, কাবা শরীফ, মদিনা শরীফ, ফুল, তারকা ও পাখিসহ নানা ছবি। এসকল বাহারি ডিজাইনের ঈদ কার্ড প্রতি পিস ৫ টাকা থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যেত। বর্তমান ঈদ কার্ডের দোকানও তেমন দেখা যায় না। যেগুলো আছে ওই গুলোতে ক্রেতাদের দেখা নেই বললেই চলে। ঈদ কার্ড কেনা লেখা ও বিতরণের ঝামেলা এড়িয়ে হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, টুইটার, ই-মেইল, ফেসবুক, ই-কার্ড, এসএমএস, এমএমএসসহ বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেই ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ের কাজ সেরে নিচ্ছেন সবাই।


 কালিগঞ্জ প্রত্যাশা কম্পিউটার এন্ড ট্রেনিং সেন্টারের পরিচালক এস কে আব্বাস জানায়, প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষও দিন দিন যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে। কার্ড কিনে নিজের হাতে ২ লাইন লেখার চেয়ে মোবাইলের কী-প্যাড আর কম্পিউটারের কী-বোর্ডে লিখতেই সবাই এখন স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।  এতে টাকা ও সময় দুইটায় বাঁচে যার কারণে এখন আর কেউ ঈদ কার্ড কেনে না।


কালিগঞ্জ থানা রোডে অবস্থিত মুন কসমেটিক্স এর মালিক মহরম এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন আগে প্রতি ঈদে ১০-১২ হাজার টাকার ঈদ কার্ড বিক্রি হত। বর্তমান মোবাইল ও কম্পিউটারের যুগে ঈদ কার্ড দোকানে উঠাইলে বিক্রি হয় না। দুই বছর আগে ৭ হাজার টাকার ঈদ কার্ড দোকানে বিক্রির জন্য কিনে আনলে বিক্রি না হওয়ায় ৩ থেকে ৪ হাজার টাকার মত লোকশান হয়েছে। তাই এখন আর ঈদ কার্ড বিক্রি করি না।