পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার ৪৭ নং মধ্য শিয়ালকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমিদাতা মোহাম্মদ ইউনুস মোল্লার অত্যাচারে শিক্ষকরা অতিষ্ঠ। তিনি গত কয়ে কদিন ধরে স্কুলের শিক্ষকদের উপর নানা ধরনের অযাচিত খবরদারি করে আসছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার পরে বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য মোহাম্মদ ইউনুস মোল্লা স্কুলে আসেন। স্কুলে এসে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসে টেবিলের উপর পা তুলে শিক্ষকদের নানারকম আদেশ নির্দেশ করতে থাকেন। একপর্যায়ে শিক্ষকদের সাথে বাকবিতন্ডা হলে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক) সাবিনা ইয়াসমিনকে জুতা নিয়ে মারতে ওঠেন। অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ এ ঘটনায় অবাক হয়ে যান।
সহকারী শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন জানান, জমিদাতা ইউনুস মোল্লা আজ বিদ্যালয়ে এসে তার কাছে স্কুলের স্টিল আলমিরার চাবি চান। তিনি চাবি দিতে অস্বীকার করায় তার বিররুদ্ধে ক্ষেপে গিয়ে তাকে নানা রকম অশ্লীল মন্তব্য করেন এবং একপর্যায়ে ইউনুস মোল্লা তার পায়ের জুতা খুলে শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রীদের সামনেই তাকে মারতে উদ্যত হন। ইউনুস মোল্লার উচ্চস্বরে হুমকি-ধামকির এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয় । বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের এ অপমানের বিচার চেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে। বিদ্যালযয়ের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আফরোজা আক্তার এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ এ ঘটনার বিচার দাবি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন।
জানা যায়, বিদ্যালয়ের জমি দাতা সদস্য মোঃ ইউনুস মোল্লা বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী। তিনি কয়েকদিন আগে বাড়িতে আসেন। বাড়িতে এসে গত ২ সেপ্টেম্বর তিনি বিদ্যালয় আসেন। বিদ্যালয়ে এসেই তিনি শিক্ষক হাজিরা খাতা নিয়ে হাজিরা খাতায় উল্টাপাল্টা মন্তব্য লেখেন। এরপর শিক্ষকদের নানাভাবে ধমকাতে থাকেন। তিনি বলেন, আমি স্কুলের জমিদাতা সদস্য। এই স্কুল আমার, আমার বাপ দাদার। আমি যেভাবে যা বলব শিক্ষকদেরকে তা শুনতে হবে। এই বলে শিক্ষকদের বিভিন্ন ধরনের আদেশ নির্দেশ করতে থাকেন। তিনি এও বলেন, যেক'দিন তিনি বাড়িত থাকবেন সে'কদিন প্রতিদিনই তিনি স্কুলে আসবেন এবং তার কথামতো শিক্ষকদের চলতে হবে। সেই থেকে তিনি প্রতিদিনই দু তিনবার করে স্কুলে আসেন। গত ৩ সেপ্টেম্বরও তিনি স্কুলে এসে একইভাবে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসে জুতাসহ দুই পা টেবিলের উপর তুলে বসেছিলেন। এলাকাবাসীর কেউ কেউ বলেন, বয়স বাড়ার কারণে তিনি হয়তো মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুল হাকিম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ ছাড়া শিক্ষক হাজিরা খাতায় অন্যকেউ মন্তব্য লেখার অধিকার রাখেন না। এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে তাহার কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সাঈদ মিয়া মনু বলেন, বিষয়টি তিনি লোকমুখে শুনেছেন। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।