কেন্দুয়ায় গৃহবধূর লাশ উদ্ধার, শাশুড়ী আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক
এ কে এম আব্দুল্লাহ, জেলা প্রতিনিধি, নেত্রকোনা
প্রকাশিত: শনিবার ২২শে জানুয়ারী ২০২২ ০৬:৩৮ অপরাহ্ন
কেন্দুয়ায় গৃহবধূর লাশ উদ্ধার, শাশুড়ী আটক

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় শ্বশুরবাড়ী থেকে কাকলী আক্তার (২২) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় গৃহবধুর শাশুড়ী বেগম আক্তারকে (৫৫) আটক করা হয়েছে।


    গৃহবধূর ভাই ও স্বজনরা জানান, গত আড়াই বছর পুর্বে কেন্দুয়া উপজেলার গড়াডোবা ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের সাত্তার মিয়ার মেয়ে কাকলীর বিয়ে হয় একই উপজেলার আশুজিয়া ইউনিয়নের হাসুয়ারী গ্রামের মৃত একদিল মিয়ার ছেলে সুপল মিয়ার সাথে। 


বিয়ের পর থেকে স্বামী ও শ^শুড়বাড়ীর লোকজন যৌতুক হিসেবে মোটর সাইকেল কিনে দেয়ার জন্য গৃহবধু কাকলী ও তার পরিবারের উপর চাপ দিয়ে আসছিল। এ নিয়ে প্রায় সময়ই স্বামী ও শ^শুড়বাড়ীর লোকজন কাকলীর উপর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। শ^শুড়বাড়ীর অত্যাচার নির্যাতন সইতে না পেরে কাকলী দুইবার তার বাবার বাড়িতে চলে আসে। পরে আবার আত্মীয় স্বজনের সহায়তায় স্বামী সুপল তার স্ত্রী কাকলীকে পুনরায় তাদের বাড়ীতে ফিরিয়ে আনে। 


গতকাল শুক্রবারও স্বামী ও শ^াশুড়ী মোটর সাইকেলের টাকা চেয়ে কাকলীকে তার বাবার বাড়ীতে ফোন দেয়ার জন্য প্রচন্ড চাপ দেয়। কাকলী তার বাপেরবাড়ী থেকে টাকা এনে দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তারা কাকলীকে বেদড়ক মারপিট করে। এক পর্যায়ে কাকলীর মৃত্যু হলে স্বামীর বাড়ীর লোকজন বিষপানে কাকলী আত্মহত্যা করেছে বলে গ্রামে অপপ্রচার চালায়। 


এরপর গ্রামের একজন লোক বিকালে কাকলীর বাপের বাড়ীতে ফোন করে বিষয়টি জানালে তারা ঘটনাস্থলে এসে উঠানে লাশ পড়ে থাকতে দেখে। তারা তাৎক্ষনিক বিষয়টি কেন্দুয়া  থানা পুলিশকে জানায়। পুলিশ আসতে দেখে স্বামীর বাড়ীর লোকজন পালিয়ে যায়। পুলিশ সন্ধ্যার দিকে এসে লাশ উদ্ধার এবং ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে তার শ^াশুড়ী বেগম আক্তারকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। শনিবার লাশ ময়না তদন্তের জন্য নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। 



   মৃতের ভাই কামরুল সহ স্বজনরা আরো জানান, তারা কাকলীর সাত মাসের শিশু বাচ্চাটিকে লুকিয়ে রেখেছে। মৃতের স্বজনরা এই নারকীয় ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির জোর দাবী জানান। 


     কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী শাহ্নেওয়াজ বলেন, এ ঘটনায় নিহতের বাবা আব্দুস সাত্তার বাদী হয়ে শ^াশুড়ী, স্বামী, দেবর, ননাসসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জনকে আসামী করে শনিবার দুপুরে কেন্দুয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। মামলার এজাহারভূক্ত আসামী শ^াশুড়ী বেগম আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামীদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।