সাফ ফুটবলে ফের স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের

নিজস্ব প্রতিবেদক
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার ১লা জুলাই ২০২৩ ০৭:৫৪ অপরাহ্ন
সাফ ফুটবলে ফের স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের

শেষ মুহূর্তের গোলে আরও একবার স্বপ্নভঙ্গ হলো বাংলাদেশের। নির্ধারিত ৯০ মিনিট কুয়েতকে আটকে রেখে অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে গোল হজম করে বসে বাংলাদেশ। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ালেও আর সমতায় ফেরা হয়নি বাংলাদেশের।


আর তাতেই ১-০ গোলে জিতে সাফের ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে কুয়েত। পাশাপাশি দুই দশক পর সাফের ফাইনালের স্বপ্ন দেখতে থাকলেও সেটি পূরণ হলো না বাংলাদেশের।


ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই সুযোগ পায় বাংলাদেশ। রাকিবের ওয়ান টু ওয়ান ডি-বক্সের ভেতর বল পেয়েছিলেন মোরসালিন। কিন্তু সেখান থেকে নেওয়া শট সরাসরি মোরসালিন নেন গোলরক্ষকের বরাবর। সেটি ঠেকিয়ে দিলে ফিরতি বলেও শট নেন মোরসালিন। তবে সেটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।


পরের মিনিটেই আক্রমণে যায় কুয়েত। কিন্তু টাইগার ডিফেন্ডারদের কল্যাণে সে যাত্রায় বেঁচে যায় টাইগাররা।


সপ্তম মিনিটে কর্ণার থেকে ব্যাক-টু-ব্যাক শট নেয় কুয়েত। বাংলাদেশের ডি বক্সের ভেতর জটলা বাঁধলেও বিপদ হতে দেয়নি বাংলাদেশের রক্ষণভাগ।


১৫তম মিনিটে ম্যাচের প্রথম কর্ণার পায় বাংলাদেশ। ডি বক্সের ভেতর জামাল ভূঁইয়া শট নিলেও সেটির নাগাল মেলেনি বাংলাদেশের।


২৪ মিনিটের মাঝামাঝি গোলের সম্ভাবনা জাগে কুয়েতের। কিন্তু জিকোর সুবাদে সেই যাত্রাতেও বেঁচে যায় বাংলাদেশ। যদিও খানিকটা ব্যথা পান টাইগার এই গোলরক্ষক।


ছয় মিনিট বাদেই আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। এবারও গোল বের করে আনতে পারেননি রাকিব।


৩৯ মিনিটের মাথায় দ্বিতীয় দফায় বাংলাদেশের ত্রাতা হয়ে আসেন জিকো। ডি বক্সের ভেতর আল রাশিদির নেয়া শট ঠেকিয়ে দিয়ে বিপদ এড়ান টাইগার এই গোলরক্ষক।


শেষদিকে বেশ কয়েকটি আক্রমণ প্রতি আক্রমণের দেখা মিললেও গোলের দেখা মেলেনি দুই দলের কারোরই। যে কারণে গোলশূন্য থেকেই প্রথমার্ধ শেষ করতে হয় দুই দলকে।


প্রথমার্ধে ছন্দে না থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ছন্দে ফেরে কুয়েত। একের পর এক আক্রমণ চালাতে থাকে বাংলাদেশের ডি বক্সে। সেই আক্রমণ ঠেকাতেই ব্যস্ত ছিল বাংলাদেশ দ্বিতীয়ার্ধের শুরটায়।


তবে ম্যাচের ৫৩তম মিনিটে কুয়েতের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দেন রাকিব। ডি বক্সের বাইরে থেকে নেয়া তার দূরপাল্লার শটটি প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক ঠেকিয়ে দিলেও নিশ্চিতভাবেই ভয় ধরে গিয়েছিল কুয়েতের ফুটবলারদের মনে।


৭ মিনিটের ব্যবধানেই ফের মোরসালিন-রাকিব কম্বিনেশন। মোরসালিনের থেকে বল পেয়ে ডি বক্সের ঠিক বাইরে থেকে শট নেন রাকিব। কিন্তু সেই শটে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ক্রসবার। ইঞ্চিখানেকের জন্য আরও একবার হতাশা সঙ্গী হয় বাংলাদেশের।


৬৯ তম মিনিটে বাংলাদেশের অরক্ষিত রক্ষণের সুযোগ নিয়ে ডি বক্সের বাম দিক থেকে শট নেয় কুয়েত। কিন্তু ডি বক্সের ভেতর থেকে খালিদির নেয়া শট আটকে যায় বাংলাদেশের রক্ষণভাগে। পরের মিনিটে আবদুল্লাহর ডান পায়ের ট্রিকি শট ঠেকিয়ে আরও একবার বিপদের হাত থেকে বাংলাদেশকে বাঁচান জিকো।


৭১তম মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে নেয়া রাকিবের ধীরগতির শট আয়ত্বের নিয়ে নেন কুয়েতের গোলরক্ষক। পরের মিনিটে আরও একটি সুযোগ হাতছাড়া হয় লাল সবুজের প্রতিনিধিদের।


৭৩ মিনিটের মাঝামাঝি আনিসুর রহমান জিকো একহাতে আটকে দেন কুয়েতের আতর্কিত আক্রমণ।


শেষদিকে বেশ আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে কুয়েত। বাংলাদেশের ফুটবলারদের ক্লান্ত হয়ে পড়ার সুযোগ নিয়ে বারবার বাংলাদেশের ডি বক্সে আছড়ে পড়তে থাকে কুয়েতের ফরোয়ার্ডের আক্রমণ। কিন্তু রক্ষণভাগের সুবাদে প্রতিবারই বেঁচে যাচ্ছিল বাংলাদেশ।


৮৭তম মিনিটে আরও একবার নিশ্চিত সুযোগ হাতছাড়া হয় বাংলাদেশের। বাম দিক থেকে বাড়িয়ে দেয়া ক্রস ডি বক্সের ভেতর থাকলেও নাগালেই পাননি রাকিব। যার ফলে আরও একবার সুযোগ হাতছাড়া হয় ক্যাবরেরা শীষ্যদের।


অতিরিক্ত সময়ের ৮ম মিনিটে আল রাশিদির ক্রস থেকে ডি বক্সের ভেতর থাকা আবদুল্লাহ শট নেন গোলমুখে। কুয়েতের শতভাগ নিশ্চিত সেই শট আটকে যায় বাংলাদেশের দেয়াল জিকোর হাতে। ফিরতি শটে আল রাশিদি ফের দুর্দান্ত এক শট নিলে সেটিও ঠেকিয়ে দিয়ে বিপর্যয় এড়ান জিকো।


কিন্তু ১০৭তম মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে আবদুল্লাহর শট চলে যায় জিকোর পায়ের নিচ দিয়ে। যার ফলে ডেডলক ভেঙে গোলের দেখা মেলে কুয়েতের। আর তাতেই ভেঙে যায় বাংলাদেশের ফাইনালে খেলার স্বপ্ন।