টানা বর্ষণ আর নদীর জোয়ারের পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে চরফ্যাশন উপজেলার নদ-নদী এলাকায় প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে উপজেলার মাদ্রাজ,আসলামপুর, হামিদপুর,আহাম্মদপুর,নুরাবাদ হাজারিগঞ্জ, চরমাণিকা, নজরুল নগর, কুকরি-মুকরি,পাতিলা ও ঢালচরসহ একাধিক চরাঞ্চলীয় এলাকা জোয়ারের পানিতে ডুবে গেছে।
এতে নষ্ট হয়েছে আমন ধানের বীজতলাসহ বিভিন্ন শাক সবজী।জোয়ারের চাপ প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকায় এ অঞ্চলের আমনের চাষ নিয়ে শঙ্কিত কৃষকেরা।
চরগুলোতে প্রায় দুই থেকে আড়াই ফুট পানির নিচে ডুবে রয়েছে আমনের বীজতলা। এছাড়াও উপকূলের সবজীর খামারীরাও রয়েছে দুশ্চিন্তায়।
উপকূলীয় এলাকাগুলোতে এক সপ্তাহের টানা বৃষ্টি ও নোনা বাতাসের তীব্র চাপ থাকায় ভাটার পানি না নামার ফলেই খাল বিল পুকুর ও জলাশয় ডুবেছে থৈ থৈ পানিতে।
জানা গেছে চলতি বছর চরফ্যাশন উপজেলায় প্রায় ৫হাজার হেক্টর জমিতে আমনের বীজতলা করা হয়। এতে উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে ৭২ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
হামিদপুর এলাকার চাষি সালাউদ্দিন জানান, তিনি দেড় একর জমিতে আমন ধানের বীজ বোনার পর চারা গজালে অতিমাত্রার জোয়ারের পানিতে সব চারা ডুবে যায়। পানি না নামলে চারার গোড়ায় পচন ধরতে পারে।’
আসলামপুর ইউনিয়নের কৃষক মনতাজুর রহমান বলেন, ‘ধারাবাহিক বর্ষার ফলে এরই মধ্যে আমার আবাদি জমি জলাবদ্ধতায় ডুবেছে। পানির জন্য জমিতে চাষ দিতে সমস্যা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন,আমার দুই একর জমির বীজতলা পামিতে তলিয়ে গেছে। বর্ষা ও জোয়ারের পানি জল্যাবদ্ধতার সৃষ্টি করেছে। এমন হলে বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হবে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড ( ভোলা ডিভিশন-২) এর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, ‘বৈরি আবহাওহার প্রভাবে মেঘনার পানি বিপৎসীমায় প্রবাহিত হওয়ার ফলে নিম্ন এলাকা ও বেড়িবাঁধের বাহিরে চরাঞ্চলীয় এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানির উচ্চতা বেড়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েকদিন পানি আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে উকূলীয় এলাকাগুলোতে ঝুঁকিপূর্ণ কোনো বেড়িবাঁধ নেই।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু হাসনাইন বলেন, চরফ্যাশনে ৪ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। যাতে উপজেলার মোট ৭২ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রাও নির্ধারণ করা হয়।
তবে আবহাওয়ার বৈরিতার ফলে অতি বৃষ্টি ও সৃষ্ট জোয়ারের পানিতে উপকূলীয় এলাকা ও চরাঞ্চলে জলাবদ্ধতার জন্য অনেকের আমন বীজতলা ডুবে গিয়েছে বলেন তিনি।
এ কর্মকর্তা আরও জানান, জোয়ারে বীজতলা ডুবলেও ভাটায় পানি নেমে যাচ্ছে। প্রতিকূল আবহাওয়া না থাকলে কৃষি বিভাগের এ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। এবং চাষিরাও লাভবান হবে বলে তিনি মনে করেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।