রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে ট্রাকের চাপায় মাথা পিষ্ট হয়ে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ৫টি ট্রাকে আগুন দিয়েছেন।মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ শুরু করেন।
এর আগে রাত ৯টার দিকে শহীদ হবিবুর রহমান হলের সামনে ট্রাকটাপায় মারা যান মাহবুব হাবিব হিমেল। তিনি কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। নিহত হিমেল শহীদ শামসুজ্জোহা হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। এছাড়া তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ড্রামা অ্যাসোসিয়েশনের (রুডা) সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের দফতর সম্পাদক ছিলেন।এ দুর্ঘটনায় আরও দুজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ক্যাম্পাসে দুটি আবাসিক হল ও একটি একাডেমিক ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। এর মধ্যে একটি হল নির্মাণ হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হলের সামনে। অন্যটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের পাশে। শহীদ হবিবুর রহমান হলের সামনে একাডেমিক ভবন নির্মিত হচ্ছে। নির্মাণ কাজে ট্রাকযোগে বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী আনা-নেওয়া করা হচ্ছে।শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ৫টি ট্রাকে আগুন দিয়েছেন
মঙ্গলবার রাতে হিমেল মোটরসাইকেলযোগে ক্যাম্পাস থেকে হলে ফিরছিলেন। পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের সামনে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা নির্মাণ সামগ্রীবাহী একটি ট্রাক মোটরসাইকেলটিকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এ ঘটনায় আহত আরও দুজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) ভর্তি করা হয়েছে।
রাত ৯টার দিকে ঘটনা ঘটেলেও এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মৃতদেহ ঘটনাস্থলেই রয়েছে। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে বিক্ষোভ করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করছেন।
হিমেলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে নির্মাণকাজে ব্যবহৃত ৫টি ট্রাক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. লিয়াকত আলি ঘটনাস্থলে গেলে শিক্ষার্থীরা আরও বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন। অবস্থা বেগতিক দেখে প্রক্টর সেখান থেকে চলে যান। পরে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন।
এরপর প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা প্রধান ফটকে থাকা সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা কাজ করছেন। পরে রাত ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক থেকে সরে যান।
রাবি প্রক্টর লিয়াকত আলি বলেন, হবিবুর রহমান হলের সামনে ট্রাক ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে একজন ছাত্রের প্রাণ গিয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। কেন এই দুর্ঘটনা ঘটেছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি। আমরা বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করছি। ভবিষ্যতে যাতে এরকম দুর্ঘটনা না ঘটে সে জন্য কড়াকড়ি নির্দেশনা দেব।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।