নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আগামী নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।
রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সিইসি হিসেবে শপথ নেওয়ার পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
সিইসি বলেন, নির্বাচন একটি চ্যালেঞ্জ। কিন্তু কোনো চ্যালেঞ্জকে তো ভয় পেলে হবে না। চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করতে হবে।
তিনি বলেন, আমি আশাবাদী সব দলের অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে পারব। সব কমিশনারের সঙ্গে আলোচনা করে আগামীকাল (সোমবার) আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করা হবে।
সবার সহযোগিতা ও দোয়া চেয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, সব রাজনৈতিক দলের অংশীদারিত্বপূর্ণ নির্বাচন করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। শুধু ইসি চাইলেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, সবার সহযোগিতা লাগবে। সর্বোচ্চ ভালোটা দেওয়ার চেষ্টা থাকবে আমাদের।
এর আগে এদিন বিকেলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট জাজেস লাউঞ্জে শপথ নেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল এবং অপর চার নির্বাচন কমিশনার। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী শপথ বাক্য পাঠ করান।
অনুষ্ঠানে প্রথমে শপথ নেন কাজী হাবিবুল আউয়াল। এরপর কমিশনার হিসেবে পর্যায়ক্রমে শপথ নেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান, সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর। অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগের বিচারপতিরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা।
এর আগে, গত ৫ ফ্রেব্রুয়ারি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন- ২০২২’ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি গঠন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে সভাপতি করে গঠিত সার্চ কমিটির অপর পাঁচ সদস্য ছিলেন- হাইকোর্টের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন এবং লেখক-অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
এ কমিটি দেশের বিশিষ্ট নাগরিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে কয়েকটি বৈঠক করেন। সে সব বৈঠকে অংশ নেওয়া অধিকাংশের দাবির প্রেক্ষাপটে ইসি গঠনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তি পর্যায়ে প্রস্তাবিত তিন শতাধিক নাম ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, শিক্ষাবিদ, সাবেক বিচারপতি, বিচারক, আইনজীবী, সাবেক আমলা, সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ও সাবেক পুলিশ কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তির নাম সেই তালিকায় উঠে আসে। তবে দুইবার সুযোগ দেওয়ার পরেও বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ইসি গঠনে সার্চ কমিটির কাছে কোনো নাম প্রস্তাব করেনি।
এমন প্রেক্ষাপটে গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের প্রতিটি পদের জন্য দুটি করে মোট ১০টি নাম রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করে সার্চ কমিটি। সেই নামের তালিকা থেকে শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রপতি নতুন সিইসি ও অন্য চারজন কমিশনারকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য নিয়োগ দেন। ওইদিনই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এরপর আজ রোববার বিকেলে তারা ত্রয়োদশ নির্বাচন কমিশনের সিইসি ও কমিশনার হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।