সোহাগ-এশার বিয়ে সম্পন্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ৬ই ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৫৩ অপরাহ্ন
সোহাগ-এশার বিয়ে সম্পন্ন

সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও ঢাবির সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইশরাত জাহান এশার গায়ে হলুদ মঙ্গলবার সম্পন্ন হয়েছে। বিয়ের অনুষ্ঠান হবে ৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায়। বুধবার সোহাগ নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, ৯ ফেব্রুয়ারি আমার ও এশার বিয়ে। জাতীয় সংসদ ভবনের পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাবের এলডি হল-২ বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

এর আগে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বিয়ের বিষয় নিয়ে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন সোহাগ ও এশার পরিবারের সদস্যরা। এরপর প্রধানমন্ত্রীসহ দুই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তোলা একটি ছবি সোহাগ তাঁর ফেসবুকের ভেরিফায়েড পেজে শেয়ার করেন। পোস্ট করা ওই ছবির ক্যাপশনে সোহাগ লিখেছেন, ‘আমার অভিভাবক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা আমাদের বিয়ের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ঠিক করে দিয়েছেন। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। সবাইকে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা। Happy New year-2020।’ এরপর গতকাল তাদের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠিত হয়।

সাইফুর রহমান সোহাগে মাদারীপুর জেলার দক্ষিণ দুধখালি ইউনিয়নের চন্দ্রপুর এ এইচ পি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক এইচ এম আবদুর রহমানের পুত্র। মা সমাজসেবী মর্জিনা খানম পেশা অবসরপ্রাপ্ত পরিবার কল্যাণ সহকারী। তিন ভাইয়ের মধ্যে সাইফুর রহমান সোহাগ ২য়। তার বড় ভাই মাহবুবুর রহমান সোহেল সুইডেনের লিনিয়াস ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ করেছেন। সুইডেন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক। সাইফুর রহমান সোহাগের আরেক ভাই আরিফ হোসেন সুমন সুইডেন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি।

ইশরাত জাহান এশা শৈলকুপা উপজেলার দেবতলা গ্রামের ইসমাইল হোসেনের মেয়ে। এশার পুরো পরিবার নিয়ে ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুরের জামতলায় বসবাস করেন। চার ভাই-বোনের মধ্যে এশা তৃতীয়। এশার বাবা ঝিনাইদহ জেলা দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)। তিনি ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিববেশকবিষয়ক সম্পাদকও। মা গৃহিনী।

Image may contain: 11 people, people smiling, people standing

এশা চার ভাই-বোনের মধ্যে তৃতীয়। এশা ঝিনাইদহ সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালে মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি ও ২০১২ সালে ঝিনাইদহ সরকারি নুরুন্নাহার মহিলা কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ নিয়ে এইচএসসি পাস করেন। ২০১২-২০১৩ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগে ভর্তি হন।

Image may contain: 7 people, people standing

কোটা সংস্কারের দাবিতে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের টানা আন্দোলনের মধ্যে ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলে এক ছাত্রীর রগ কেটে দেওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ওই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলের মোর্শেদা নামের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রীর রক্তাক্ত পায়ের ছবিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ছবির সঙ্গে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে হলের মেয়েদের রগ কেটে দিয়েছেন এশা। এই গুজবের ওপর ভিত্তি করে হলের মেয়েরা তাকে অবরুদ্ধ করে ফেলেন। এরপর ছাত্রীরা এশাকে মারধর করেন এবং জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করেন।

তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী ওই হলে গিয়ে এশাকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন। ওই রাতেই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এশাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠান।

এ ছাড়া ঘটনা তদন্তে কমিটিও গঠন করে ছাত্রলীগ। পরে জানা যায়, মোর্শেদার পা কেউ কাটেনি, বরং এশার কক্ষের জানালার কাচে লাথি মারতে গিয়ে তার পা কেটে যায়। এরপর ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা এশার সঙ্গে দেখা করেন এবং তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও গণমাধ্যমে কথা বলেছেন।

পরবর্তী সময়ে তিন দিনের মাথায় এশার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করে ছাত্রলীগ। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে। ঘটনা তদন্তের দায়িত্বে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আবিদ আল হাসান ওই সময় সংবাদ সম্মেলনে করে বলেন, সেই রাতে পরিস্থিতিটাই তখন এমন ছিল যে তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য এশাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছিল।
ইনিউজ ৭১/এম.আর