বৈশ্বিক মহামারী ‘করোনা’ ভাইরাসে স্তব্দ হয়ে পড়েছে গোটা বিশ্ব। এর কোন প্রতিষেধক এখনো আবিস্কার হয়নি। তবে করোনা থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন ওষুধ সেবনের পাশাপাশি শরীরচর্চা/ব্যায়াম করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। এদিকে গ্রামগঞ্জের সেই সব ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলায় মেতে উঠেছে দামাল ছেলেরা। যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে হারাতে বসেছিল, এখন সেই সব খেলাগুলো শহর, গ্রাম সর্বত্রই চোখে পড়ে। প্রতিদিনই সকাল, দুপুর, বিকেল এমনকি বৃষ্টিতে ভিজেও যুবক, বয়স্ক, তরুনরা সেই পুরনো দিনের খেলায় মেতে উঠছে। মনে হয় যেন শৈশবে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ‘করোনা’। তবে এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে।
‘করোনা’র ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে শিশু ও তরুন-তরুনীরা। স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় ঘরের মধ্যে তাদের সময় কাটছে না। এতে করে তাদের মানসিক সমস্যা হওয়ার আশংকা রয়েছে। তাই চিকিৎসকদের ভাষ্য এই মুহুর্তে সন্তানদের সাথে বাবা-মায়ের বন্ধুসুলভ আচরণ করা এবং তাদেরকে সময় দেয়া উচিত। পাশাপাশি সন্তানদের মানসিক ও শারিরীক বিকাশে ইনডোর গেম (খেলাধুলা)’র ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে হা-ডু-ডু, কানামাছি ভোঁ ভোঁ, দাড়িয়াবাধা, গোল্লাছুট, ব্যাঙ লাফ, ডুব সাতার, ডাংগুলি, এক্কাদোক্কা, বৌচি, পুতুল খেলা, লুকোচুরি ইত্যাদি। ইট পাথরের অট্টালিকায় আর আকাশ ছোঁয়া সংস্কৃতিতে এ সমস্ত খেলাধুলার অধিকাংশই হারিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে দেশের আনাচে কানাঁচে সংঘবদ্ধ হয়ে যুবক ও তরুন তরুনী এসব খেলায় মেতে উঠেছে। তবে এক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।
কেননা মহামারী করোনা ভাইরাস ছোঁয়াছে রোগ। কোন পরিবারের সদস্য কিংবা কোন পরিবার করোনায় আক্রান্ত তা অনেকেই জানেন না। আবার চিকিৎসকদের মতে, করোনা ভাইরাস প্রতিনিয়ত তাদের রূপ পরিবর্তন করছে। তাই দলবদ্ধ হয়ে খেলাধুলার ব্যাপারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। বিশেষ করে কোন ভাবেই চোখ নাক ও মুখে হাতের স্পর্শ করা যাবে না।
এ ব্যাপারে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থপেডিক বিভাগের ইনডোর মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোস্তফা মুহাম্মদ লুৎফুল আজিজ বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় শিশু কিশোর ও যুবক-যুবতীরা মোবাইল গেম এর দিকে ঝুঁকছে। এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। না হলে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে তাদের উপর।
সরকারি নির্দেশনা মানতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিশু-কিশোরদের শারিরীক ও মানসিক বিকাশের সীমিত সামর্থ্যরে মধ্যে অভিভাবকদের উচিত ইনডোর গেমের ব্যবস্থা করা। সর্বপরি সন্তানদেরকে বার বার স্মরণ করিয়ে দিতে হবে যাতে তারা চোখ, নাক ও মুখে হাতের স্পর্শ না করে।
তিনি আরো বলেন, করোনার উপসর্গ প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। নিত্য নতুন উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে গা ব্যাথা, স্বাধ না পাওয়া, ঘ্রাণ শক্তি কমে যাওয়ার লক্ষণও দেখা যাচ্ছে বলেন তিনি। এক্ষেত্রে পরিবারের শিশু ও বয়স্কদের ব্যাপারে সবসময় সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।