বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার তাদের সকল অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড আড়াল করতে এবং দুঃশাসনকে প্রলম্বিত করতে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচারের কৌশল হিসেবে লবিস্ট নিয়োগের বিষয়টি উল্লেখ করছে।
আজ মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজ বাংলাদেশের জনগণসহ দেশের সীমানা পেরিয়ে গোটা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ গণতন্ত্রহীন, মানবাধিকারহীন, ন্যায় বিচারহীন একটি দেশ হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে যদি নির্বাচন ব্যবস্থাকে আইসিইউতে ঢুকানো বলে অবহিত করি, তাহলে এ কথা নিশ্চিত করে বলাই যায় ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনের ভোট রাতে করে, রক্তের হলি খেলায় মত্ত এই দানব কর্তৃত্ববাদী সরকার বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থার কবর রচনা করেছে।
তিনি বলেন, মানুষের ভোটের অধিকার হরনের জন্য সরকারি বাহিনী ব্যবহার করে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, রাজনৈতিক গায়েবি মামলার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত এই সরকারের অপকর্মের ফিরিস্তি আজ সর্বজনবিদিত। তাদের অপকর্মের জন্য যদি কারও ভিসা বাতিল হয় এবং নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয় তা গোটা জাতির জন্য কলংকজনক অধ্যায় হলেও এই কানকাটা নির্লজ্জ সরকার এটাকে জাতীয় সংকট হিসাবে গণ্য না করে বেহায়ার মতো তাদের অপকর্ম ঢাকার জন্য অপতৎপরতায় লিপ্ত।
কোনো সভ্য গণতান্ত্রিক দেশ হলে সরকার সর্ব প্রথম সেই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, অথচ সরকার হাঁটছে উল্টো পথে। গুমের শিকার পরিবারের বাড়ি বাড়ি পুলিশ পাঠিয়ে হুমকি ধামকি দিচ্ছে, খুনিদের রক্ষার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যা থেকে প্রমাণ হয় সরকারের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিরা এই সব খুন গুমের সাথে জড়িত। তাই অবিলম্বে সরকার পদত্যাগ করে খুন, গুমের সাথে জড়িত নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সকলের নিরপেক্ষ তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নিশ্চিত করা উচিত।
তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থাকে ধামাচাপা দিয়ে কর্তৃত্ববাদী অবৈধ সরকার জনগণের করের টাকায় আমেরিকায় লবিস্ট নিয়োগ করেছে যা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের মাধ্যমে স্বীকৃত। তার ভাষ্য মতে, সরকারের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের জন্য তারা লবিস্ট নিয়োগ করেছে। খুন, গুমের মতো অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তির দায় কিংবা ব্যক্তির স্বেচ্ছাচারিতায় নিমজ্জিত প্রতিষ্ঠানের দায় রাষ্ট্র কিংবা সরকার কিভাবে জনগণের টাকায় ভাবমূর্তি রক্ষার নামে ব্যয় করে? জনগণের টাকায় লবিস্ট নিয়োগ করে সরকার মানবাধিকার লংঘনের মতো গুরুতর অপরাধে নিজেদের জড়িত থাকার বিষয়টিই প্রমাণিতভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
তিনি বলেন, একজন প্রবাসী বাংলাদেশি কর্তৃক লবিস্ট নিয়োগের বিষয়টি আমাদের দলের ঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। দেশের গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার লংঘনের বিরুদ্ধে যদি কোনো প্রবাসী কোনো পদক্ষেপ কোথাও নেয়, দেশের প্রতি তার ভালোবাসার জন্য যদি কিছু করে সে পদক্ষেপ দায়িত্ব তার, বিএনপির নয়। ঐ পদক্ষেপকে নৈতিক সমর্থনের দায়িত্ব বাদে অন্য কোনো দায় দায়িত্ব বিএনপি বহন করে না। বিশ্বের দেশে দেশে প্রবাসীদের গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার রক্ষার জন্য এ ধরনের দেশপ্রেমিক পদক্ষেপকে বিএনপি সাধুবাদ জানায় এবং তাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।