বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, বর্তমান সরকার চেষ্টা করছে দেশের প্রতিটি গ্রামকে শহরের আদলে গড়ে তোলার। গ্রামের নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে তবেই সরকারের এ প্রচেষ্টা নিশ্চিত হবে। তবে এ ক্ষেত্রে বিট পুলিশিংয়ের কোনো বিকল্প নেই।আজ মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) রাজারবাগের পুলিশ অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ পুলিশ নির্মিত গ্রাফিক নভেল ‘দুর্জয়ের ডায়েরি’ এবং অ্যানিমেটেড ফিল্ম সিরিজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন প্রতিটি গ্রামই হবে শহর। যে সুযোগের আশায় মানুষ শহরে আসে, সে সুযোগ-সুবিধা গ্রামেই তৈরি হবে। যার ফলে প্রতিটি গ্রাম হবে শহর। শিক্ষা, চিকিৎসা সেবাসহ অবকাঠামোগত বিষয়গুলো যখন গ্রামে তৈরি করতে পারব, তখন মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যাবে। আগামী ২০৩০ সালের দিকে এই চিত্র দেখা যাবে।
যদি প্রতিটি গ্রাম শহর হয় তাহলে নিরাপত্তা একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হবে, উল্লেখ করেন বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, নিরাপত্তা ছাড়া গ্রাম শহর হবে না। নিরাপত্তা অক্সিজেনের মতো, একটি মানবদেহ যেমন অক্সিজেন ছাড়া জীবিত থাকতে পারে না, তেমনি নিরাপত্তা ছাড়া একটি সমাজ চলতে পারে না। গ্রাম তখনই দ্রুত শহর হবে, যখন নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে। এ জন্য সারাদেশে আমরা বিট পুলিশিং নিয়ে কাজ করছি। এর মাধ্যমে গ্রামে সাধারণ মানুষের কাছে পুলিশি সেবাটা আমরা নিয়ে যাওয়া চেষ্টা করছি।
তিনি আরও বলেন, বিগত বছরগুলোতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। এই গবেষণার মাধ্যমে আমরা প্রচুর তথ্য জানতে পেরেছি। পুলিশের পক্ষ থেকেও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গবেষণার উদ্যোগ নেওয়া হয়। পুলিশের গবেষণাটি উন্নতমানের গবেষণা হয়েছে। এই গবেষণাটি খুব দ্রুত আমরা প্রকাশ করতে চাই।
পুলিশের গবেষণায় দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে থানা স্থাপন করার স্বপ্ন দেখতেন। বঙ্গবন্ধুর স্পষ্ট ধারণা ছিল স্বাধীনতা পরবর্তী পুলিশ কলনিয়ান বা সেমি-কলনিয়ান পুলিশ হবে না। এই পুলিশ হবে জনবান্ধব। তিনি স্বল্প সময়ে বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রার সব বিষয় স্পর্শ করেছেন। এমন আইন ও পরিকল্পনা করেছেন যে সেগুলো এই মুহূর্তেও কারো মাথায় আসবে না।
বিট পুলিশিং সম্পর্কে পুলিশ ও নাগরিকদের ভালোভাবে জানতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিট পুলিশিং সেবার ক্ষেত্রে বিট পুলিশ ও নাগরিক উভয় পক্ষে আগে ভালো করে জানতে হবে, তারা কী সেবা নিতে এবং দিতে পারবেন। আর সেই কারণে আমরা গ্রাফিক নভেল ও অ্যানিমেটেড ফিল্ম সিরিজ উদ্বোধন করেছি।
এসবের মাধ্যমে দ্রুত তথ্য মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়। গ্রাফিক নভেলের মাধ্যমে আমরা নিরাপত্তাজনিত বার্তাগুলো মানুষকে দিতে চাই। আমরা চাই যারা সেবা নেবেন তাদের যেন স্পষ্ট ধারণা থাকে তিনি কী কী সেবা নিতে পারবেন, অন্যদিকে যিনি সেবা দেবেন তারও যেন স্পষ্ট ধারণা থাকা তার কাজের বিষয়ে।
আইজিপি বলেন, করোনার কারণে মানুষের অর্থনৈতিক কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। ফলে অপরাধীদেরও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার প্রভাব দেখা গেছে। তবে বিশ্বাস করি করোনার প্রভাবে অর্থনৈতিক যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তা মোকাবিলা করে আমরা আগের জায়গায় ফিরে যাব।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।