অফিস পাহারার ফাঁকে সরকারী গাছ চুরি!

নিজস্ব প্রতিবেদক
রিফাত হোসাইন সবুজ, জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ৬ই এপ্রিল ২০২৩ ১০:২০ অপরাহ্ন
অফিস পাহারার ফাঁকে সরকারী গাছ চুরি!

নওগাঁ সমবায় চত্তরের কোন প্রকার টেন্ডার ছাড়াই ৫টি গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে নিরাপত্তা প্রহরীর বিরুদ্ধে। সরেজমিনে গিয়ে দেখ াগেছে, নওগাঁ সমবায় চত্তরে বিভিন্ন বয়সী ফলজ ও বনজ গাছ রয়েছে। এর মধ্যে বিভন্নি সময়ে রাতে ও দিনে চুরি করে বেশ কিছু গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে জেলা সমবায়ের নিরাপত্তা প্রহরী (নাইট গার্ড) রাজু আহম্মেদের বিরুদ্ধে।  


প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন সময় নাইট গার্ড রাজু গাছ গুলো কেটে বিক্রি করেন। গত কয়েকদিন আগে রাস্তা সংলগ্ন চায়ের স্টলের কাছে থাকা প্রায় ১৪ থেকে ১৫ বছরের পুরানা একটি গাবল গাছ কেটে বিক্রি করেন তিনি। এসময় প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় চা দোকানি গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে নাইট গার্ড রাজু বলেন- অফিসের বড় বাবু গাছ কাটতে বলছে তাই কাটতেছি। কাটা গাছ গুলি সমবায় চত্তরের অফিসার্স ক্লাব সংলগ্ন নার্সারি ব্যবসায়ী চঞ্চল হোসেন এর সহায়তায় স্থানীয় কেডির মোড় সংলগ্ন কাঠ ব্যবাসায়ী রাজ্জাক হোসেনের কাছে বিক্রি করেন তারা। সমবায় চত্তরে থাকা জাম গাছ, গাবল গাছ সহ বহু পুরনো প্রায় ৫ থেকে ৬টি গাছ বিভিন্ন সময়ে কেটে বিক্রি করেছেন বলে জানা গেছে।

সমবায় চত্ত্বরের চা দোকানি সুজন হোসেন বলেন, নাইট গার্ড রাজু ভাই রোজা শুরুর এক-দুইদিন আগে আমাদের দোকানে থাকা গাছটি কাটতে এসে আমকে সহায্য করতে বলছে, তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম কে গাছ কাটতে বলছে কিছু হবেনা তো ? তখন সে বললো বড় বাবু বলছে তুমি ধরো তখন আমি ধরছি। তারপর রাজু ভাই গাছ কেটে নিয়ে চলে গেছে।


এ বিষয়ে নার্সারি ব্যবসায়ী চঞ্চল হোসেন বলেন, আমি একদিন রাজুর সাথে গেছিলাম গাছ ডালপালা নিয়ে ৩'শ টাকায় বিক্রি করেছি সেগুলা। ২’শ টাকা রাজুকে দিছি আরো ১০০টাকা এখনো পাবে আমার কাছে। 


কেডির মোড়ের কাঠ ব্যবসায়ী রাজ্জাক হোসেন বলেন, সমবায়ের নাইট গার্ড রাজু এর আগে ২ দিন আমার কাছে গাছ কেটে নিয়ে আসছিলো আমি সেগুলা কিনে নিছি। আর আরেকবার রাজু আর ফুলের দোকানদার আসছিলো গাছ দিতে আমি তো ছিলাম না তখন রেখে চলে গেছে পরে এসে ফুলের দোকানি টাকা নিয়ে গেছে।


অভিযুক্ত নাইট গার্ড রাজুর কাছে অনুমতি ছাড়া কিভাবে গাছ কেটে বিক্রি করলেন বিষয়টি জানতে চাইলে, সাংবাদিকের উপর চড়াও হয়ে বলেন, এ বিষয়ে আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করার রাইট আপনাদের নাই। আমি গাছ কাটিনি কথা বলতে হলে আমার অফিসারের সাথে বলেন আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করবেন না। আপনাদের যা খুশি করেন, টিভিতে দেখাবেন নাকি পত্রিকায় দিবেন দেন।


জেলা সমবায় অফিসের প্রধান সহকারী (বড় বাবু) সুকুমল বাবুর কাছে গাছ কাটার নির্দেশনা দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, গাছ কাটার নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা আমার হাতে নেই আমি কেন গাছ কাটতে বলব। আমি এ বিষয়ে কিছু জানিনা।


জেলা সমবায় কর্মকর্তা খন্দকার মনিরুল ইসলাম বলেন, গাছ কাটার বিষটি আমার জানা নেই। আমি অফিসের লোক পাঠিয়ে কাটা গাছ গুলোর স্থান পরিদর্শন করিয়েছি, কারা কারা এর সাথে জড়িত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।