'মুজিবনগরের রাজাবাবু' দাম ৩৫ লাখ

নিজস্ব প্রতিবেদক
এস এম তারেক হোসেন, জেলা প্রতিনিধি মেহেরপুর
প্রকাশিত: শুক্রবার ১৬ই জুন ২০২৩ ০৩:০৬ অপরাহ্ন
'মুজিবনগরের রাজাবাবু' দাম ৩৫ লাখ

তিন বছর আগে ৬ মাস বয়সী একটি গরুর বাছুর ৮৫ হাজার টাকায় কেনেন মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী গ্রামের খামারি ইনছান আলী। তারপর থেকেই গরুটি লালন পালন করে আসছেন তিনি। খামারি ইনছান আলী গরুটির নাম রেখেছেন 'মুজিবনগরের রাজাবাবু'।


গতবছর কুরবানির ঈদে ক্রেতারা রাজাবাবুর দাম সাড়ে ১৫ লাখ টাকা হাঁকলেও; গরুটি বিক্রি করেননি   খামারি ইনছান আলী। কালো কুচকুচে নাদুস-নুদুস গরুটির দাম এবারের কোরবানি বাজারে হাঁকানো হচ্ছে ৩৫ লাখ টাকা। মেহেরপুরে এবার কুরবানির পশুর হাটে সবচেয়ে আলোচিত গরু রাজাবাবু। প্রতিদিন গরুটিকে দেখতে খামারি ইনছান আলীর বাড়িতে ভীড় জমাচ্ছেন বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। 


লম্বায় সাড়ে ১০ ফুট, উচ্চতায় ৬ ফুট আর ওজনে ৬০ মনের কালো কুচকুচে গরুটির রাজাবাবু নামের মতো খাবারও রাজকীয়। কাঁচা ঘাস, বিচালি, ভুট্টা, ছোলা, মোটরের ডাল, চালের গুড়া মিশিয়ে প্রতিদিন ২০ কেজি খাবার দিতে হয়। প্রতিদিন দুইবার গোসলও করাতে হয় তাকে। 


গরুটির মালিক খামারি ইনছান আলী বলেন, গত বছর কুরবানিতে গরুটি বিক্রি করবো ভেবেছিলাম। দাম চেয়েছিলাম ২৫ লাখ টাকা। সাড়ে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছিল। কিন্তু ভাবলাম আর একটু বড় করে আগামী বছর কুরবানিতে রাজাবাবুকে বিক্রি করবো। এখন বিক্রি করতে চাচ্ছি। দাম চাচ্ছি ৩৫ লাখ টাকা। রাজধানী ঢাকাসহ জেলা ও জেলার বাইরে থেকে ব্যবসায়ীরা আসছেন। তবে এখন পর্যন্ত তারা তেমন দাম বলেননি। তবে আশা করছি ভালো দামে বিক্রি করতে পারবো রাজাবাবুকে।


খামারি ইনছানের স্ত্রী শাহিনা আক্তার বলেন, নিজের ছেলেমেয়ের মতো রাজাবাবুকে বড় করেছি। পরিবারের প্রতিটি সদস্যদের প্রাণিটির উপর মায়া জড়িয়ে গেছে। মন চায়না গরুটি বিক্রি করতে। কিন্তু প্রয়োজনের তাগিদেই রাজাবাবুকে বিক্রি করতে হবে। এ কথা বলতে বলতে তার চোখে পানি চলে আসে। 


জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো: সাইদুর রহমান বলেন, সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ে রাজাবাবুকে লালন পালন করা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের পরামর্শ ইনছান আলীকে দেয়া হয়েছে। এখন গরুটি যাতে ভালো দামে বিক্রি করা যায় সে চেষ্টা করছি। আমাদের একটি অনলাই পেজ আছে। সেখানে রাজাবাবুর ছবি, মালিকের নাম ও মোবাইল নাম্বার দিয়ে প্রচারণা চালাবো। গত বছরও এ প্রচারণা আমরা চালিয়েছিলাম। সেখান থেকে অনেক ফোন আসে। এবারও আমরা সে চেষ্টা করে যাচ্ছি। কারণ এমনিতে খামারিরা বেশি মোটা গরু পালন করতে চান না। ইনছান আলী যদি রাজাবাবুর ভালো দাম পান তাহলে অনেক খামারি বড় গরু লালন পালনে আগ্রহী হবেন।