নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে পরকীয়ার টানাপোড়েনে এক দেবর তার ভাবিকে নির্মমভাবে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় শ্বশুরও গুরুতর আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১০টার দিকে চৌমুহনী পৌরসভার হাজীপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত শাহনাজ আক্তার পিংকি (৩৫) চৌমুহনী পৌরসভার নোয়াবাড়ির কুয়েত প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী এবং দুই সন্তানের মা ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত, পিংকির দেবর সাইফুল ইসলাম (৩০), যাকে স্থানীয়রা খালেদ নামে চেনেন, একই বাড়িতে বসবাস করতেন। নিহতের বড় বোন ফারজানা আক্তার সুমি জানান, খালেদ এবং পিংকির মধ্যে সম্পর্কের অবনতির সূত্রপাত ঘটে প্রায় এক বছর আগে। পিংকির পুরনো মোবাইল ফোন সারাতে খালেদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়, কিন্তু সে মোবাইল থেকে পিংকির ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও চুরি করে তা দিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে সাত লাখ টাকা দাবি করে।
এছাড়া, খালেদ পিংকিকে শারীরিক সম্পর্কের জন্য প্রস্তাব দেয় এবং ব্যর্থ হয়ে তাকে আরো টাকা দাবি করে। এরপর সে পিংকিকে পরকীয়ায় জড়ানোর চেষ্টা করে, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। গত কয়েক মাসে এই ব্যাপারে পিংকি আদালতে মামলা করেন এবং খালেদ পিংকির স্বামী দেশে ফিরে আসার পর তাকে হামলা করারও অভিযোগ ওঠে।
মঙ্গলবার সকালে পিংকি তার শ্বশুর রেজাউল হকের (৭২) সঙ্গে বাবার বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে হাজীপুর এলাকায় পৌঁছালে খালেদ তাদের পথরোধ করে। তাদের মধ্যে কথার কাটাকাটির পর খালেদ পিংকিকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। ঘটনাস্থলেই পিংকি মারা যান এবং শ্বশুর রেজাউল হককে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। স্থানীয়রা পিংকির মরদেহ এবং শ্বশুরকে উদ্ধার করে চৌমুহনী লাইফ কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যান, যেখানে পিংকিকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান জানান, নিহত পিংকির পরিবার এবং খালেদের পরিবারের মধ্যে পূর্বে থেকেই দ্বন্দ্ব চলছিল। খালেদ ও পিংকির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা উত্তেজনার পর এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। পুলিশ ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়া হচ্ছে ।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।