নওগাঁয় পানি নিস্কাশনের পথ বন্ধ করে পুকুর খনন: কৃষকদের চাষাবাদ নিয়ে শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক
রিফাত হোসাইন সবুজ, জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২৮শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৩:৩৪ অপরাহ্ন
নওগাঁয় পানি নিস্কাশনের পথ বন্ধ করে পুকুর খনন: কৃষকদের চাষাবাদ নিয়ে শঙ্কা

নওগাঁর বদলগাছীতে বর্ষাকালে মাঠের একমাত্র পানি নিস্কাশনের পথ কালভার্ট ব্রিজের মুখ চিরতরে বন্ধ করে দিয়ে অবৈধভাবে পুকুর খনন করা হচ্ছে। এতে আমন ধান চাষ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। উপজেলার বালুভরা ইউনিয়নের দোনইল মাঠে কালভার্টের মুখ বন্ধ করে পুকুর খননের অভিযোগ উঠেছে।  


সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দোনইল চাঁনপুর সড়কের কালভার্ট ব্রিজের মুখ মাটি ও বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দক্ষিণ পার্শ্বে পুকুর খনন করা হয়েছে। এতে সড়ক হুমকির মুখে পড়ার পাশাপাশি মাঠের এপার ও ওপারের পানি নিষ্কাশনের কোনো পথ থাকছে না। স্থানীয় কৃষকরা জানান, বর্ষাকালে এই অবস্থায় হাজার বিঘা জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং বাড়িঘরে পানি উঠতে পারে।  


স্থানীয় দোনইল গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই, খোরশেদ আলম, নাসির উদ্দিন, জুয়েল হোসেন, ইনছের আলী, নয়ন কৃষ্ণসহ বেশ কয়েকজন বলেন, এক সপ্তাহ আগে রাতের আঁধারে ভিকো মেশিন দিয়ে পুকুর খনন করা হয়েছে। সকালে তারা পুকুর দেখতে পেয়ে প্রতিবাদ জানালেও পুকুর খননকারী বদিউল ইসলাম তাদের ডিসি অফিসে অভিযোগ দিতে বলেন। গ্রামবাসী মাঠের পানি নিস্কাশনের পথের সুরক্ষা চেয়ে ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।  


পুকুর খননকারী বদিউল আলম জানান, ইউএনও অফিস থেকে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। তিনি দাবি করেন, ১০ মাস আগে ৭ লাখ টাকা দিয়ে বিঘা জমিটি কিনে পুকুর খনন করেছেন। তিনি আরও বলেন, মাঠের পানি নিস্কাশনের জন্য পুকুর পাড়ে রিং পাইপ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।  


কালভার্টের মুখের জমির মূল মালিক অরুপ কুমার বলেন, গত ৬ মাস আগে তিনি জমিটি বিক্রি করেছেন। তিনি জানান, এটি পানি নিষ্কাশনের পথ ছিল।  


বদলগাছী উপজেলা কৃষি অফিসার সাবাব ফারহান বলেন, কালভার্টের মুখটি যদি বন্ধ থাকে তাহলে বর্ষা মৌসুমে ঐ মাঠে আমন ধান চাষ ব্যহত হবে। তিনি আরও জানান, এই সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  


বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইসরাত জাহান বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করেন যে, সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।  


স্থানীয় কৃষকরা আশা করছেন, প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপে তাদের জমির পানি নিষ্কাশনের সমস্যা সমাধান হবে এবং আমন ধান চাষ বাঁচানো সম্ভব হবে। এদিকে, অবৈধ পুকুর খনন বন্ধ ও কালভার্টের মুখ খুলে দেওয়ার দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।