টেকনাফে ৬৯টি বোমা ও বোমা তৈরীর সরঞ্জামসহ আটক-২

নিজস্ব প্রতিবেদক
আমান উল্লাহ কবির,নিজস্ব প্রতিনিধি টেকনাফ (কক্সবাজার)
প্রকাশিত: রবিবার ১৬ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৫:৩৯ অপরাহ্ন
টেকনাফে ৬৯টি বোমা ও বোমা তৈরীর সরঞ্জামসহ আটক-২

কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৬৯টি দেশীয় বোমা ও বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। অভিযানে দুইজনকে আটক করা হয়েছে, তবে আরও দুইজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।


রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ফুলের ডেইল এলাকায় একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে বিজিবি সদস্যরা কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আশপাশের এলাকা ঘিরে ফেলে এবং প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালায়। পরিত্যক্ত একটি বাড়ির জরাজীর্ণ অংশ থেকে ৬৯টি তৈরি করা হাতবোমা, ১.৬ কেজি সালফার, ১.৩ কেজি লালা, ৩১টি জর্দার কৌটা, ২২০ গ্রাম গুনা তার ও ১টি প্লাসসহ দুইজনকে আটক করা হয়।


গ্রেফতারকৃতরা হলেন চাঁদপুরের মতলব উত্তর থানার নবুরকান্দি গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মোঃ সম্রাট প্রধান (৩৩) এবং নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানার দক্ষিণ গারমোরা গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে মোঃ অন্তর (৩২)। অভিযানের সময় বাড়ির আঙিনায় অবস্থান করা আরও দুইজন পালিয়ে যান।


টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি)-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, আটককৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে যে তারা একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য এবং দীর্ঘদিন ধরে বোমা তৈরি ও সরবরাহের সঙ্গে জড়িত। এই চক্র চুক্তিভিত্তিক বোমা তৈরি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করত। ধারণা করা হচ্ছে, এসব বোমা সন্ত্রাসী ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছিল।


তিনি আরও বলেন, “উদ্ধারকৃত বোমা ও সরঞ্জামাদির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় তদন্ত চলছে। আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা প্রক্রিয়াধীন এবং তাদেরকে টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হবে। একইসঙ্গে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অভিযুক্ত বাড়ির মালিকের সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”


বিজিবি জানিয়েছে, সীমান্ত এলাকায় অপরাধমূলক কার্যক্রম রোধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। সীমান্তবর্তী অঞ্চলে দেশীয় অস্ত্র তৈরির এই চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।


স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই এলাকায় সন্দেহজনক কিছু ঘটছে বলে তারা আগেই ধারণা করেছিলেন। পরিত্যক্ত বাড়িগুলোতে মাঝেমধ্যে অপরিচিত লোকজন যাতায়াত করত। তবে এত বড় মাত্রায় বোমা তৈরির কাজ চলছে, তা তারা ধারণাও করতে পারেননি।


আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উদ্ধার হওয়া বোমা ও সরঞ্জাম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ করা যায়। সীমান্ত এলাকায় সন্ত্রাসী ও অপরাধমূলক কার্যক্রম প্রতিরোধে বিজিবি, পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী একযোগে কাজ করছে।