২১-এ প্রযুক্তি জগতের আলোচিত বিষয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার ২৭শে ডিসেম্বর ২০২১ ০৯:৩৬ অপরাহ্ন
২১-এ প্রযুক্তি জগতের আলোচিত বিষয়

বিদায় নিচ্ছে করোনার আরও একটি বছর। ২০২০ সালের পাশাপাশি ২০২১ সালেও করোনার দাপট কম ছিল না। তবে দাপট থাকলেও এ বছর প্রযুক্তি জগতে উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা ঘটে। যাকে বলা হচ্ছে প্রযুক্তি ট্রেন্ড। আর এসব পরিবর্তন সম্পর্কে জানাতে আজকের এই আয়োজন।


চলুন দেখে নেই এ বছর প্রযুক্তি বিশ্বের আলোচিত সব বিষয় সম্পর্কে-


১. অটোমেশন 

প্রযুক্তি বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় অটোমেশন বা স্বয়ংক্রিয় কাজকর্ম। আমরা প্রত্যেকেই প্রযুক্তির সহযোগিতায় অনেক কাজ করে থাকি। আর এসব কাজ করতে গিয়ে আমাদের তেমন পরিশ্রম করতে হয় না। আমরা কীভাবে দ্রুত গতিতে অটোমেশনের মধ্যে ঢুকে পড়ছি তা আমাদের চোখের সামনে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে স্বয়ংক্রিয় গাড়ি চালনা, স্মার্ট ডিভাইজের ডেটা ক্লিন সিস্টেম, স্মার্ট হোম নোটিফিকেশন। আর এসব প্রযুক্তি হলো অটোমেশন প্রযুক্তি। 


২০২৫ সালের মধ্যে ৫০০০ কোটি ডিভাইজকে এই অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। শুধু অটোমেশন নয় এখানে কাজ করবে থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি এবং রোবট। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, প্রযুক্তিবিদদের মধ্যে ৭৪ শতাংশ বলছেন কর্মক্ষেত্রে খুবই নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠছে এই অটোমেশন বা স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি। ৪৯ শতাংশ বলছেন, এর মাধ্যমে খরচ অনেক কমে যাচ্ছে। 


২. মেটাভার্স

এ বছরের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল ফেসবুক ইনকরপোরেট নামের পরিবর্তন। মূলত ইন্টারজগতকে আরও প্রসারিত করতে এর নাম করণ করা হয় মেটাভার্স। ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ ফেসবুক কোম্পানির নাম পরিবর্তন করার পর বিশ্ব জুড়ে হৈ চৈ পড়ে যায়। মেটাভার্সের মাধ্যমে অতি সহজেই মানুষ এখন ভার্চ্যুয়াল জগতে প্রবেশ করতে পারবে। 


৩. সিকিউরিটি: সাইবার এআই 

বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নতি হলেও এর নিরাপত্তার জন্য বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান কোটি কোটি অর্থ ব্যয় করছে। ২০১৫ সালে প্রযুক্তিরখাতে নিরাপত্তার জন্য ৩ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়। ২০২১ সালে তা বেড়ে হয় দ্বিগুণ অর্থাৎ ৬ ট্রিলিয়ন ডলার। বলা হচ্ছে ২০২৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়াবে ১০.৫ ট্রিলিয়ন ডলার। 


এআই সাইবার আসলে কী?

আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে এখন থেকে হ্যাকারদের বিরুদ্ধে লড়াই করা হবে। অর্থাৎ এখন আর মানুষের মস্তিষ্ক ব্যবহৃত হবে না। 


৪. ব্লকচেইন বা ডিএলটি

ব্যবসায়িক খাতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে চলেছে ব্লকচেইন এবং লেজার প্রযুক্তি বা ডিস্ট্রিবিউটেড লেজার টেকনোলাজি (ডিএলটি)। অর্থ লেনদেন ব্যবস্থাকে আরও কীভাবে নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য করা যায় তা নিয়ে কাজ করে ব্লকচেইন। আর ডিএলটি এর কাজ হলো সম্পকে ডিজিটালাইজেশন করা।  এই দুই প্রযুক্তি মাধ্যমে অতি সহজেই নিরাপদভাবে অর্থ লেনদেন করা যায়। যেখানে হ্যাক হওয়ার কোনো ভয় নেই। বলা হচ্ছে, এই ব্লকচেইনের মাধ্যমে বিটকয়েন লেনদেন আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। 


৫. ৫ জি প্রযুক্তি/নেটওয়ার্ক 

পঞ্চম প্রযুক্তির যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বিশ্ব। ২০২১ সালে বেশ কয়েকটি দেশে ৫জি চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। ৫জি প্রযুক্তি বা নেটওয়ার্ক সুবিধার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা, মোবাইল যোগাযোগ এবং উৎপাদন ক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। ফলে অর্থনৈতিক উন্নতি ব্যাপক আকারে পরিবর্তন ঘটবে। বলা হচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক জিডিপি ১.২ ট্রিলিয়ন থেকে ২ ট্রিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে।


৬. ক্লাউড প্রযুক্তি

বিগত দুই বছর ধরে এই ক্লাউড প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বিশ্বের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানটি এখন ডিজিটাল সার্ভিস এবং ভার্চ্যুয়ালমুখি হয়ে পড়ছে। ক্লাউড প্রযুক্তির মাধ্যমে খুব সহজেই একটি কোম্পানির কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব। এক্ষেত্রে মানুষের সহযোগিতা খুব বেশি দরকার হচ্ছে না। 


৭. ক্লিন টেক

প্রতিনিয়ত প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। এর ফলে ব্যাপক আকারে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। আর পরিবেশ দূষণের কারণে এর প্রভাব পড়ছে জলবায়ূর ওপর। বৈশ্বিক জলবায়ূ পরিবর্তনের কারণে বিশ্ব এখন হুমকির মুখে দাঁড়িয়ে আছে। এজন্য প্রযুক্তি ব্যবহার যেন পরিবেশ দূষণ না ঘটাতে পারে সেজন্য পরিষ্কার প্রযুক্তি বা ক্লিন টেকের কথা ভাবা হচ্ছে। 


সূত্র: দ্য ইকোনমিক টাইমস