ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে। সীমান্তে যুদ্ধের ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে দুপক্ষ। একদিকে রাশিয়ার মহড়া, অন্যদিকে ইউক্রেনের সেনাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে মার্কিন সেনাবাহিনী। এরইমধ্যে পোল্যান্ডে পৌঁছেছেন অতিরিক্ত মার্কিন সেনারাও।
এদিকে রাশিয়ার সঙ্গে ন্যাটোবিরোধী কার্যক্রমে যোগ দিয়ে পশ্চিমাদের একসঙ্গে মোকাবিলার ঘোষণা দিয়েছে চীন। উত্তেজনার মধ্যেই চলতি মাসে রাশিয়া ও ইউক্রেন সফরে যাচ্ছেন ফ্রান্স ও জার্মান রাষ্ট্রপ্রধান।
অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র, রণসরঞ্জামবাহী সাঁজোয়া যান, যুদ্ধবিমান আর রণতরী নিয়ে রাশিয়ার মহড়া—এটাই বলে দিচ্ছে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত তারা। ইউক্রেন নিয়ে পশ্চিমাদের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই সীমান্তে সামরিক অনুশীলন চালাচ্ছে রুশ সেনারা।
শুক্রবারও ভরোনেজ অঞ্চলে সামরিক মহড়া, পাশাপাশি আটলান্টিক মহাসাগরে নৌমহড়ায় অংশ নেয় তারা। সোভিয়েত ইউনিয়নের এক সময়ের মিত্রদেশটিও রাশিয়াকে মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সীমান্তে ব্যাপক মহড়ার পাশাপাশি যে কোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে অনুশীলন চলছে ইউক্রেনের সেনাদের। তাদের প্রশিক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে খোদ মার্কিন সেনাবাহিনী। এ সময় ইউক্রেনের সেনাদের রণকৌশল দেখান মার্কিন সেনারা। আর এসব মাঠে গিয়ে তদারকি করছেন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেকসি রেজনিকোভ।
বেলারুশ সীমান্তে রাশিয়ার ব্যাপক সামরিক মহড়ার বিষয়ে তিনি জানান, কিয়েভের বিশ্বাস, বেলারুশ থেকে কোনোভাবেই ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারবে না মস্কো।
সীমান্তে চরম উত্তেজনার মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঘোষণা অনুযায়ী, প্রথম ধাপের অতিরিক্ত মার্কিন সেনাদল পোল্যান্ডে পৌঁছেছে।
একইদিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক রসদবাহী একটি বিমানও পৌঁছায় দেশটিতে। এ দিন পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠক করেন। ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিতে একত্রে কাজ করার অঙ্গীকার করেন তিনি।
এদিকে, ন্যাটোর কর্মকাণ্ড বিস্তারের প্রতিবাদে রাশিয়ার সঙ্গে একাট্টা হয়েছে চীন। বেইজিংয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনিপিংয়ের বৈঠকে, পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়াই করার ঘোষণা দেন দুই নেতা।
ইউক্রেন ইস্যুতে চীন ও রাশিয়া একাট্টা হওয়ার ঘোষণা দিলেও আপাতত তা স্বাভাবিকভাবেই দেখছে মার্কিন প্রশাসন। হোয়াইট হাউস জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের নিজস্ব নীতি অনুযায়ী স্বাভাবিক সম্পর্ক রয়েছে।
তবে আপাতত ইউক্রেনে রুশ হামলা ঠেকানোই বাইডেন প্রশাসনের মূল লক্ষ্য। রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমাদের এই তুমুল উত্তেজনার মধ্যেই চলতি সপ্তাহে মস্কো ও কিয়েভ সফরে যাবেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।
তার পরের সপ্তাহে দেশ দুটি সফরের কথা রয়েছে জার্মান চ্যান্সেলরের। দুই রাষ্ট্রনেতার মস্কো ও কিয়েভ সফরের মধ্য দিয়ে চলমান সঙ্কট সমাধানের আশা করছে ফ্রান্স ও জার্মানি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।