মালয়েশিয়ায় বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ডের’ বিধান বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার ১৭ই জুন ২০২২ ০৬:৪৮ অপরাহ্ন
মালয়েশিয়ায় বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ডের’ বিধান বাতিল

বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিল করলো মালয়েশিয়া। সরকারের তরফ থেকে ঘোষণাটি আসার পরই চলছে আলোচনা-সমালোচনা। অনেকেই বলছেন, এতে সমাজে অপরাধ প্রবণতা বাড়বে। বিকল্প শাস্তি কী হতে পারে- সেটা নিয়েও বিতর্ক চলছে। অবশ্য একে প্রগতিশীল পদক্ষেপ হিসেবে ঢালাও সমর্থন দিচ্ছেন মানবাধিকারকর্মীরা। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।


কুয়ালালামপুর পুদু কারাগারেই মৃত্যুদণ্ডের অপেক্ষায় রয়েছেন ১১ বন্দি। গোটা মালয়েশিয়ায় এই শাস্তিপ্রাপ্ত অপরাধীর সংখ্যা ১৩শ’র বেশি। যাদের বেশিরভাগই হত্যা এবং মাদক মামলায় দোষী সাব্যস্ত। কিন্তু সরকার বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ডের বিধান থেকে সরে আসায় সুতোয় ঝুলছে তাদের ভাগ্য।


মালয়েশিয়ার আইন ও বিচার মন্ত্রী ওয়ান জুনাইদি জাফর বলেন, এতোটা দিন বিচারকরা হয়তো ভেবেছিলেন- অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিৎ নয় অথবা ৪০ বছর যাবজ্জীবন দিলেই যথেষ্ট। অথচ বাধ্যতামূলক শাস্তি প্রদানের আওতায় লিখতে হয়েছে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান। কারণ বিকল্প নেই। নীতিমালার সামনে তাদের হাত-পা বাধা।


সরকারি সিদ্ধান্তে মালয়েশিয়ার সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অনেকেই বলছেন, এতে অপরাধীরা ছাড় পাবে। সমাজে নৈরাজ্য বাড়বে।


অনেকে বলছেন, বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ড দেয়ার সিদ্ধান্ত পরিবর্তনকে সমর্থন জানাচ্ছি। তার বদলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হোক। কারণ সমাজে শান্তি বজায় রাখতে কেন্দ্রীয় শাসনের প্রয়োজন আছে।


মৃত্যুদণ্ড এতদিন অপরাধীদের শায়েস্তা করার মোক্ষম অস্ত্র ছিল। এখন তারা বিকল্প আবেদন জানাতে পারবে। এর মাধ্যমে সমাজে অপরাধ বৃদ্ধি পেতে পারে। অবশ্য, দণ্ডবিধি শিথিলের জন্য লড়াই করা আইনজীবী এবং মানবাধিকারকর্মীরা জানাচ্ছেন ঢালাও সমর্থন।


ল’ইয়ার্স ফর লিবার্টির উপদেষ্টা এন সুরেন্দ্রনাথ বলেন, বহুল আকাঙ্ক্ষিত ছিল শাস্তি কাঠামোয় পরিবর্তনের ঘোষণা। মৃত্যুদণ্ডের বিধান সংস্কারে বহুদিন ধরে আমরা প্রচারণা চালাচ্ছিলাম। নিঃসন্দেহে এটি ইতিবাচক এবং স্বাগত জানানোর মতো ঘটনা। তবে মৃত্যুদণ্ড পুরোপুরি বাতিল না করায় আমরা কিছুটা হতাশ।


২০১৮ সালে মালয়েশিয়া মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ওপর স্থগিতাদেশ ঘোষণা করে। কিন্তু আদালতে দোষী সাব্যস্ত খুনি-মাদক চোরাকারবারি-ধর্ষকদের বাধ্যতামূলক ফাঁসি বাস্তবায়নের বিধান রয়ে গেছে। তাই বিকল্প সাজা নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত ধোঁয়াশা থাকছে।