রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি সংকট, ঘাট সংকট, নাব্যতা সংকট, নদীতে তীব্র স্রোত এবং ঘন কুয়াশার কারণে প্রতিনিয়ত থাকে উভয় ঘাটে তীব্র যানজট। এতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সাধারণ মানুষের রাজধানীর সাথে যোগাযোগে নানা প্রকার দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
রবিবার (১৪ নভেম্বর) সকালে থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে সরেজমিন গিয়ে একাধিক ভুক্তভোগী ও ঘাট সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে এমনি চিত্র দেখা যায় ও জানা যায়।
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমানে ৬টি রোরো (বড়) এবং ৮টি ইউনিটিলিটিসহ (ছোট) মোট ১৪টি ফেরি চলাচল করে। দৌলতদিয়া পারে ৭টি ঘাটের মধ্যে ৪টি সচল রয়েছে। ৩টি ফেরি ঘাট দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ রয়েছে। এদিকে পাটুরিয়া ৫টি ফেরি ঘাটের মধ্যে ২টি দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ রয়েছে। বাকী ৩টি ফেরিঘাট সচল রয়েছে।
ঘাট বন্ধ, ফেরি সংকট এবং পাটুরিয়া পারে ফেরি ঘাট সংলগ্ন নদীতে নাব্যতা থাকায় এই নৌরুটে ফেরি চলাচলে ব্যাহত হচ্ছে। প্রতিটি ফেরির স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ সময় লাগছে। যে কারণে প্রতিনিয়ত উভয় ঘাটে যানবাহন পারের অপেক্ষায় রয়েছে।
যাত্রীবাহী বাস সোহাগ পরিবহনের এক চালক বলেন, সারাবছর এই ঘাটে দুর্ভোগ থাকে। কখনও ফেরি সংকট, কখনও নাব্যতা সংকট আবার ঘন কুয়াশা। এভাবে সারা বছর একটার পর একটা সমস্যা থাকেই। ৭ দিনের ৫ দিন দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে উভয় ঘাটে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে ফেরি পার হতে হয়।
যাত্রীবাহী বাসে যশোর থেকে আসা গাজীপুর গামী যাত্রী তোফায়েল হোসেন জানান, রাত ১ টায় দৌলতদিয়া ঘাটে এসেছি। সকাল ১০টা পর্যন্ত ফেরিতে উঠতে পারি নাই। গুরত্বপূর্ণ সময় দৌলতদিয়া ঘাটে বসেই শেষ হয়ে গেল। সারা রাত গাড়ীর সিটে বসে কাঁটাতে হলো। জানিনা কখন ফেরি পার হয়ে কর্মস্থলে পৌছাতে পারবো।
তিনি আরও বলেন, তীব্র যানজটের কারণে আমার মত হাজার হাজার মানুষের গুরত্বপূর্ণ সময় দৌলতদিয়া ঘাটে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে সরকারের উচিত দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি বৃদ্ধি করা।
কাভার্ড ভ্যান চালক সোবাহান শেখ বলেন, ৩ দিন দৌলতদিয়া ঘাটে বসে আছি। এখনও সিরিয়াল পাইনি। কখন পাব বলতে পারছি না। ভাড়ার টাকা দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটেই ব্যয় হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চললে মালিক বাঁচবে কিভাবে। আর আমরা বাঁচবো কিভাবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মোঃ শিহাব উদ্দিন জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি সংকট এবং নদীতে নাব্যতা সংকট রয়েছে। যে কারণে গত কয়েকদিন যাবৎ ফেরি চলাচলে দীর্ঘ সময় ব্যয় হচ্ছে। কখনও কখনও দ্বিগুণ সময় লাগছে। যে কারণে প্রতিনিয়ত উভয় ঘাটে কিছু যানবাহন ফেরি পারের অপেক্ষায় থাকে।
তিনি আরও বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমানে ৬টি রোরো (বড়) ও ৮টি ইউটিলিটি (ছোট) সহ মোট ১৪টি ফেরি চলাচল যানবাহন পারাপারে কাজ করছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।