মৌলভীবাজারের মেয়ে বিয়ে করল ভারতের নারী

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার ৪ঠা সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:১১ অপরাহ্ন
মৌলভীবাজারের মেয়ে বিয়ে করল ভারতের নারী

অবশেষে পূর্ণতা পেলো ছয় বছরের সম্পর্ক। পবিরার ও বন্ধুবান্ধবদের উপস্থিতিতে তামিলনাডুর সুবিক্ষা সুব্রামণি বিয়ে করলেন বাংলাদেশি টিনাকে। গত বুধবার চেন্নাইতে এই সমকামী জুটির চারহাত এক হলো। তামিল ব্রাহ্মণ পরিবারের মেয়ে সুবিক্ষা আর বাংলাদেশের হিন্দু রক্ষণশীল পরিবারের কন্যা টিনার বিয়ের অনুষ্ঠানটি সম্পূর্ণ হলো তামিল ব্রাহ্মণ রীতি মেনেই।


জানা গেছে, ছয় বছরের সমকামী সম্পর্কের কথা বাড়ির লোকেদের জানানো সহজ ছিল না সুবিক্ষা ও টিনার জন্য। প্রথম দিকে আপত্তি জানালেও শেষে দুই পরিবারের সম্মতি নিয়েই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেন এই সমকামী যুগল।


২৯ বছর বয়সি সুবিক্ষা বললেন, বহু বছরের প্রচেষ্টার পর এই দিন দেখতে পেয়ে দারুণ লাগছে। দুই পরিবারের সম্মতি নিয়ে সব আচার-অনুষ্ঠান মেনে বিয়ে করা আমাদের স্বপ্ন ছিল। সেই স্বপ্ন শেষমেশ পূরণ হলো।


সুবিক্ষার মা পূর্ণপুষ্কলা সুব্রামণি জানালেন, মেয়ের সমকামী সম্পর্কের কথা সমাজে জানাজানি হলে নিন্দার ঝড় উঠবে ভেবে প্রথম দিকে তিনি বেশ আতঙ্কিত ছিলেন। কিন্তু সুবিক্ষা তাদের ভালোভাবে বোঝানোর পর উদ্বেগ দূর হয়। তারা বুঝেছিলেন, মেয়ের ভালো থাকাই আসল। সমাজের চোখরাঙনির কথা ভাবা সম্পূর্ণ অর্থহীন। চিন্তাধারায় বদল আনার জন্য সুবিক্ষার বাবা-মা মনোবিদের কাছেও যান।


৩৫ বছর বয়সী টিনার আগেও বিয়ে করেছিলেন। টিনার বয়স যখন ১৯ বছর তখন তার বাবা-মা জানতে পারেন, মেয়ে সমকামী। তাদের ধারণা ছিল, মেয়ে কোনো মানসিক রোগেই আক্রান্ত হয়েছে। তাই জোর করে এক পুরুষের সঙ্গে তার বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। টিনার বোন এই বিষয় প্রথমে আপত্তি জানালেও পরে তিনিও মেনে নেন বিয়েটি। তবে কিছু বছর পরে সেই বিয়ে ভেঙে যায়। টিনা বেরিয়ে আসেন।


২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট সমকামী মেলামেশাকে অপরাধ মুক্ত করে দিলে বিয়ে এখনো ভারতে আইনি বৈধতা পায়নি। তাই সরকারি খাতায় তাদের বিয়ে নথিভুক্ত না হলেও পারিবারিক স্বীকৃতি আদায় করে নিয়েছেন এই দুই কন্যা। সমাজও এই বিষয়ে ধীরে ধীরে উদার হচ্ছে।


সুবিক্ষা ও তার স্ত্রী টিনা দুজনেই কানাডার ক্যালগরি শহরের বাসিন্দা। ক্যালগরির ফুটহিলস মেডিকেল সেন্টারের পেশেন্ট কেয়ারে কর্মরত টিনা বলেন, আমার বেড়ে ওঠা মৌলভীবাজারে। ২০০৩ সালে মা-বাবার সাথে আমি মন্ট্রিলে আসি। আমার বোন বিয়ের পর এখানে থাকতে শুরু করে।