শিমুল ফুলে ঋতুরাজ বসন্তের আগমনী বার্তা বরিশালে

নিজস্ব প্রতিবেদক
এইচ.এম.এ রাতুল, জেলা প্রতিনিধি, বরিশাল।
প্রকাশিত: শনিবার ১২ই ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৫:৩৭ অপরাহ্ন
শিমুল ফুলে ঋতুরাজ বসন্তের আগমনী বার্তা বরিশালে

বরিশালে বসন্তের আগমন টের পাওয়া যাচ্ছে গাছের দিকে তাকালেই। নতুন পাতা আর ফুলে ছেঁয়ে যাওয়ার দিন শুরু হলো বলে। এ যেন অপূর্ব সৌন্দর্য। শীতে শীর্ণ গাছগুলো অনেক ঝরিয়েছে পাতা। ফাগুনের ঝিরিঝিরি দখিনা বাতাসে অল্প অল্প উড়ছে ঝরা পাতাগুলো। বনে বনে ধ্বনিত হচ্ছে পাতা ঝরার গান। একটু ওমের পরশ পেতেই গাছের ডালে ডালে উঁকি দিচ্ছে নতুন পাতা, নতুন কুঁড়ি। বসন্তের আগমনে নবপত্রপল্লবে শোভিত হয়ে উঠছে বনরাজি, ফুলের বাগান। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বনরাজির এই বসন্ত রূপকে বলেছেন, ‘এলো বনান্তে পাগল বসন্ত/ বনে বনে মনে মনে রং সে ছড়ায় রে, চঞ্চল তরুণ দুরন্ত।’ এখন যেন শুধুই অপেক্ষা বসন্তের আগমনের। 


মাঘের শেষে বিকেলের সূর্যটা হেলে পড়েছে পশ্চিমে। ম্রিয়মাণ আলুথালু সূর্যের আলো এসে পড়েছে  বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যান, শিশু পার্কের বেশ কিছু গাছে ফোটা ফুলগুলোর গায়ে। রৌদ্রবতী সে ফুলের নাম রুদ্রপলাশ। এ ফুলের রং সাধারণত লাল হয়, পলাশের মতোই। কিন্তু এই দুর্লভ বাসন্তী রঙের রুদ্রপলাশগুলো দেখে শিহরিত হন প্রকৃতিপ্রেমীরা। বসন্তের ফুল পলাশ। এ দেশের অনেক জায়গায় ফোটে এই ফুল। শিমুল-পলাশকে বলা হয় বসন্তের প্রতীক। এই শিমুল ও পলাশের লাল ছাড়া হলুদ ফুলেরও দেখা মেলে এ দেশে। 


বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজের গার্ডেনে রয়েছে হলুদ পলাশের গাছ। সেখানে গেলে দেখা মেলে পাখি ফুল বা লাল ব্রাউনিয়ার। আহা কী লাল থোকায় ঠাসা ফুলের মঞ্জরি! সবুজ পত্রপল্লবের ঘন পাতার মধ্যে যেন বাংলাদেশের পতাকা। সে উদ্যানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। তবে ফুলের অভূতপূর্ব স্ফুরণ চোখে পড়ে বরিশাল বা দখিনের উপকূলীয় অঞ্চলের ডোবাগুলোয় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে পানিয়া মাদারের গাছ ও রক্ত লাল বর্ণের ফুল। 


এছাড়াও রয়েছে প্রতিটি গাছে আমের মুকুল। যেদিকে দু-চোখ পরে লাল-হলুদের সমারোহে মুখর চারপাশ। ফোটা ফুলের মধুনিতে ভোমরের পাশাপাশি আসে অতিথি পাখিরদল। আবার একটু গ্রাম অঞ্চলের দিকে গেলে দেখা মিলবে কলই শাক ও কাচা ধান গাছে সৃষ্ট সবুজের এক সৌন্দর্যের লীলাভুমি।