অর্থ সঙ্কট কাটাতে ডাকাতিতে হুজি সদস্যরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সোমবার ৪ঠা মার্চ ২০১৯ ০৩:৫১ অপরাহ্ন
অর্থ সঙ্কট কাটাতে ডাকাতিতে হুজি সদস্যরা

নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (হুজি) তাদের অর্থ সঙ্কট কাটাতে ডাকাতিতে নেমেছে। ডাকাতির প্রস্তুতিকালে আটক ১২ ডাকাত ও হুজির দুই সক্রিয় সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে।গ্রেনেড হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কারাবন্দি জঙ্গি উজ্জ্বলের নির্দেশে অর্থ সঙ্কট কাটিয়ে সংগঠন পরিচালনার পরিকল্পনা করে হুজি। হুজির কয়েকজন সহযোগী মিলে বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করে লুণ্ঠিত অর্থের ৩০ শতাংশ সংগঠনের কাজে ব্যয় করে আসছিল তারা। গোয়েন্দা পূর্ব বিভাগের একটি টিম রোববার (৩ মার্চ) রাত ১০টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ধোলাইরপাড় এলাকা থেকে ১২ ডাকাত আটক করে। পরে তাদের দেয়া তথ্যে রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে রামপুরা এলাকা থেকে জঙ্গি সংগঠন ও হুজির দুই সদস্যকে আটক করে গোয়েন্দারা। নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার রয়েছে এমন ব্যক্তিদের তারা টার্গেট করে ডাকাতি করতো।

আটক দুই হুজি সদস্য হলেন হাফিজ ওরফে খালিদ ওরফে ইব্রাহিম গাজী ও মামুনুর রশিদ ওরফে বাচ্চু মোল্লা। তাদের কাছ থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র, একটি বিদেশি একে-২২ বোরের রাইফেল, একটি পাইপগান, ৪১ রাউন্ড গুলি, ১২টি জিহাদি বই, গানপাউডার, ককটেল, পাঁচটি কালো রঙের মুখোশ ও ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। আটক ডাকাত সদস্যরা হলেন মোফাজ্জল হোসেন ওরফে বড় ভাই ওরফে দাদু (ডাকাত সর্দার), মোহাম্মদ জহির উদ্দিন ভূঁইয়া ওরফে চৌধুরী, আতিকুর রহমান, মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ওরফে নয়ন, লাড্ডু মোল্লা, কাইয়ুম শিকদার, আলাউদ্দিন শেখ, মুন্সি খসরুজ্জামান মেজর ওরফে মেজর, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হাওলাদার, সুব্রত দাস, মিন্টু কর্মকার এবং অলিউল্লাহ হাওলাদার অলি।
অর্থ সঙ্কট কাটাতে ডাকাতিতে হুজি সদস্যরা
তাদের কাছ থেকে চারটি বিদেশি পিস্তল, ৩৩ রাউন্ড গুলি, ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত একটি পিকআপ, মুখোশ, চাপাতি, ছোড়া কাটার, হেস্কো ব্লেড, স্লাইড রেঞ্জ ও স্কচটেপ উদ্ধার করা হয়। আজ (সোমবার) দুপুরে ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মলনে অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আব্দুল বাতেন এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, আটকরা ধোলাইরপাড় পূবালী ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ডকে জিম্মি করে ডাকাতির পরিকল্পনায় জড়ো হয়েছিল। ডাকাতির পরিকল্পনা করতো হুজি আর বাস্তবায়ন করতো ডাকাতরা। এ পর্যন্ত ৯টি ডাকাতি করে ৫ কোটি টাকা লুণ্ঠনের কথা স্বীকার করেছে, যা থেকে ৩০ ভাগ টাকা সংগঠনের কাজে ব্যয় করতো তারা।

আব্দুল বাতেন বলেন, চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি (রোববার) ময়মনসিংহের ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানির ডাকাতির চেষ্টাকালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি করে পালিয়ে যায়। ওই ঘটনায় এক পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হন। ডাকাত দলের সদস্যরা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করে ইতোপূর্বে বিভিন্ন মেয়াদে জেল খেটেছে। তিনি আরও বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জঙ্গি উজ্জ্বলের নির্দেশে তারা এ কাজ করতো। এছাড়া সংগঠন পরিচালনা করার লক্ষ্যে কাশিমপুর কারাগারে অবস্থানরত উজ্জ্বলকে যে কোনো উপায়ে মুক্ত করার পরিকল্পনা ছিল তাদের। আটকদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী, অস্ত্র আইন ও ডাকাতির মামলা করা হয়েছে।

ইনিউজ ৭১/এম.আর