পাটের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে হতাশায় ভূঞাপুরের চাষীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফুয়াদ হাসান রঞ্জু, উপজেলা প্রতিনিধি, ভূঞাপুর- টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ৫ই সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৮:৪০ অপরাহ্ন
পাটের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে হতাশায় ভূঞাপুরের চাষীরা

বাংলাদেশ রপ্তানী করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখে যেসব পণ্য তাদের মধ্যে সোঁনালী আঁশ (পাট) অন্যতম। সেই সোঁনালী আশ পাট আবাদ করে হতাশায় পড়েছে পাট চাষিরা। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার পাট চাষিরা পাট চাষ করে দাম না পেয়ে চরম আশাহত হয়ে পড়েছেন। বাংলার সোনালী আঁশখ্যাত পাট চাষ করে এখন যেনো কৃষকের গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েছে। স্বপ্ন নিয়ে পাটচাষ করে কাঙ্খিত মূল্য না পেয়ে স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। লোকসান হওয়ার আশঙ্কায় বর্তমানে ব্যবসায়ীরা পাট কেনা প্রায় কমিয়ে দিয়েছেন।

পাটে না, কৃষকের এখন ভরসা (শোলা) পাটকাটিতে। পাটের চেয়ে পাটকাটিকে যত্ন করে সংরক্ষণ করছেন তারা। পাটকাটি পাওয়ার আশায় অনেকেই শ্রমিক নিয়ে পচনকৃত পাট থেকে আঁশ ছাড়াচ্ছেন। আবার এখন আর আগের মতো ডোবা নালা না থাকায় পাট জাগ দেওয়া কষ্ট হয় গেছে। অপর দিকে সরকারিভাবে কোনো পাট ক্রয় কেন্দ্র না থাকায় পাটের বাজারের এ দূরাবস্তার আরেকটি কারন। এভাবে চলতে থাকলে একদিন চাষিরা পাটচাষ থেকে সম্পূর্ণরুপে মুখ ফিরিয়ে নেবে এমনটাই মনে করছে কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় ৪ হাজার ১’শ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু বন্যা ও আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি। উপজেলার গোবিন্দাসী, নিকরাইল, শিয়ালকোল হাট ঘুরে দেখা গেছে, গত বছরে প্রতি মণ পাটের দাম ছিল ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৮’শ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু এ বছরের শুরুতে মণ প্রতি দাম কমে ১ হাজার ২’শ থেকে ১ হাজার ৮’শ টাকায় দাড়িয়েছে। একটু গায়ের রঙ মন্দ হলে সে পাট কেনার ক্রেতারা অনাগ্রহ দেখাচচ্ছে।

পাট চাষি গাবসারা ইউনিয়নের রুলীপাড়া গ্রামের রউফ মন্ডল ও কালিপুরের জুরান শেখ বলেন,ও পাট ব্যবসায়ী কোরবান আলী, আব্দুর রহমান, মওলা বিশ্বাস, উজ্জলসহ অনেকেই জানালেন, এবছর পাটের দাম অনেকটা কম। পাটের বাজারে কখন কি ঘটে বলা মুশকিল। লোকসান জেনে তো আর পুঁজি বিনিয়োগ করতে পারি না। মনের মধ্যে শঙ্কা থাকায় পাট কিনতে সাহস পাচ্ছিনা। কারণ গত বছর পাট কিনে ধরা খেয়েছি। লোকসান দিয়ে কিছু পাট বিক্রি করলেও এখনও কম বেশি পাট গুদামে আছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জিয়াউর রহমান বলেন, বিভিন্ন কারণে পাটের ফলন যেমন কম সেই সাথে মূল্যও কম। পাটের যে ফলন এবং দাম তাতে করে প্রত্যেক পাট চাষিকে কম বেশি লোকসান গুণতে হবে। এভাবে প্রতি বছর আশা নিয়ে পাটচাষ করে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হলে একদিন হয়তো চাষিরা আর পাট চাষই করবে না। তিনি আরো বলেন, পাটের আঁশ ছাড়ানোর জন্য রিবন পদ্ধতি ব্যবহার করলে শ্রমিক খরচ কমে আসবে।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব