শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভাড়াউরা চা বাগানের চা শ্রমিক নারায়ণ রবিদাসের মেধাবী সন্তান সুজন রবিদাস। তিনি এ বছর নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু ভর্তি ফির ১৬ হাজার টাকা জোগাতে না পারায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন পূরণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। ‘অর্থাভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছেন না চা শ্রমিকের সন্তান’ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত এই সংবাদটি নজরে আসে মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র ফজলুর রহমানের। শুক্রবার বিকেলে তিনি সুজন রবিদাসকে পৌর মেয়রের কার্যালয়ে ডেকে এনে মেয়র ফজলুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ফি বাবদ নগদ ১৬ হাজার টাকাসহ কিছু পোশাক তার হাতে তুলে দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালিঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রাণেশ গোয়ালা এবং বিটিভির জেলা প্রতিনিধি হাসানাত কামাল। রবিদাসের সাহায্যে এগিয়ে আসা মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র ফজলুর রহমান বলেন, 'চা শ্রমিক সন্তান' পত্রিকায় এই সংবাদটি দেখে সাথে সাথে চা শ্রমিকের মেধাবী সন্তান সুজন রবিদাসের সাহায্যে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেই। তারপর পৌরসভা কার্যালয়ে সুজনকে আমন্ত্রণ জানাই। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ১৬ হাজার টাকা দিতে পেরে ভালো লাগছে। আশা করছি এখন সে ভর্তি হতে পারবে। তাকে কিছু কাপড়ও উপহার দিয়ে দিলাম।
তিনি বলেন, ‘আমাদের পিছিয়ে পড়া সমাজের মানুষজন এগিয়ে যাক, সে প্রত্যাশা করি। এই চা-বাগানেও অনেক মেধাবী সন্তান আছে। মেধা-দক্ষতা-যোগ্যতায় বদলে দিক তাদের বর্তমান অবস্থা। আমাদের মেধাবী সন্তানেরা টাকার জন্য লেখাপড়া করতে পারবে না, এটা হতে পারে না। পিছিয়ে পড়া সমাজের মানুষকে এগিয়ে নিতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’ ভর্তির টাকা পেয়ে সুজন বলেন, ‘আমি খুশি এবং আনন্দিত যে আমি লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারব। এই সংবাদ প্রকাশের পর আরও অনেকেই আমাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এসেছেন।’ সুজন মেয়র ফজলুর রহমান, চেয়ারম্যান প্রাণেশ গোয়ালাসহ সাহায্যে এগিয়ে আসা সবার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সুজনের বাবা চা শ্রমিক নারায়ণ বলেন, সুজনকে নোয়াখালী নিয়ে যাওয়া আসা এবং বইপত্র ও ভর্তির টাকাসহ ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা দরকার। ভর্তির পর তার থাকা-খাওয়া বাবদ প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা লাগবে। আমার ইচ্ছে থাকলেও আমি পারছি না। সরকার বা কোন বিত্তবান এগিয়ে আসলে তবেই সম্ভব সুজনের লেখাপড়া নিয়মিত হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের ঘরে অনেক দিন খাবার থাকে না, প্রায়ই অর্ধেক খাবার সবাই মিলে খাই। কিন্তু আমার ছেলে এত কিছুর মধ্যেও লেখাপড়া থেকে তার মনোযোগ নষ্ট করেনি।’
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।