পাঁচ মোটরসাইকেল আরোহীসহ সোমবার সড়ক দুর্ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যু
সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচ মোটরসাইকেল আরোহীসহ ১১ জনের মৃত্যু। সোমবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এসব নিহতের ঘটনা ঘটেছে।
টাঙ্গাইল জেলার বাসাইলে মোছা. সনিয়া আক্তার নামে সপ্তম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীর বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে। সোমবার বিকেলে উপজেলার কাশিল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সে ওই গ্রামের মো. শহিদ মিয়ার ছেলে ও কেবিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কাশিল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মির্জা রাজিক বলেন, বিকেলে ঝড় বৃষ্টির সময় ওই স্কুলছাত্রীর বাড়ির পাশে আম কুড়াতে যায়। এ সময় বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানান, মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সড়ক দুঘর্টনায় আরিফুজ্জামান আরিফ (৩২) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। এ সময় পিয়াস (১৯) নামে এক যুবক আহত হয়েছেন।
সোমবার ( ৮ জুন) রাত সাড়ে আটটার দিকে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বোয়ালিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আরিফুজ্জামান গাইবান্ধা সদর উপজেলার পশ্চিম বাটিকামাড়ী এলাকার মোসলেম উদ্দিনের ছেলে।
পুলিশ ও প্রতক্ষদর্শীরা জানান, আরিফুজ্জামানসহ দুইজন মোটরসাইকেলযোগে গোবিন্দগঞ্জ থেকে গাইবান্ধার দিকে যাচ্ছিলেন। যাত্রা পথে বোয়ালিয়া এলাকায় পৌঁছলে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আরিফুজ্জামান ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এসময় মোটরসাইকেলে থাকা অপর ব্যক্তি গুরুতর আহত হন।
খবর পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে এবং আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।আহত পিয়াস পাবনার আমিনপুর থানার আফজাল হোসেনের ছেলে।
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, মানিকগঞ্জে পানিতে ডুবে ও সাপের কামড়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দুপুরে সিংগাইর ও শিবালয় উপজেলায় এ ঘটনা দুটি ঘটে।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্র জানায়, সিংগাইর উপজেলার জামির্তা ইউনিয়নের জাইল্যা গ্রামে নানা বাড়ি বেড়াতে এসে পানিতে ডুবে মারা যায় নাসিম খান (৭) নামে এক শিশু। সে ওই উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের মেদুলিয়া গ্রামের আবুল কালাম খানের ছেলে।
জানা গেছে, নানা বাড়ির পাশে একটি ইটভাটার পুকুর পাড়ে বসে খেলা করার সময় বাড়ির লোকজনের অজান্তে পানিতে ডুবে যায় সে।পরে তার মরদেহ পানিতে ভেসে ওঠে।
এছাড়া শিবালয় উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিযনের ধানতারা গ্রামে সাপের কামড়ে জায়েদুল হোসেন ইমন (১০) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। ইমন ওই এলাকার রহিজ হোসেনের ছেলে।
নিহতের বাবা রহিজ হোসেন জানান, ইমন স্থানীয় ঢাকাইজোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।বাড়ির পাশে মরিচ খেতে যাওয়ার সময় ইমনকে সাপে কামড় দেয়।পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যু হয় তার।
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানান, জেলার কমলনগরে যাত্রীবাহী লেগুনা ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে আমিন উল্যা (৫৫) নামে এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে।
সোমবার (৮ জুন) দুপুরে উপজেলার চরজাঙ্গালীয়া এলাকার রামগতি-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আমিন উল্যা রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের চরসীতা এলাকার বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় জমিদারহাট বাজারের হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী।
কমলনগর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ নুরুল আবছার বলেন, লেগুনার চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি। কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান, জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলার আলমসাধু মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে মো. মিথুন (২৮) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৮ জুন) দুপুরে উপজেলার লক্ষীপুর নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মিথুন উপজেলার দুরিবিন্নী গ্রামের মসলেম উদ্দীনের ছেলে।
হরিণাকুন্ডু থানা পুলিশে উপ-পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান জানান, দুপুরের দিকে লক্ষীপুর গ্রামের রাস্তা দিয়ে মিথুন বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে আলমসাধুর সাথে তার মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলায় পাওয়ার ট্রলির চাপায় এক শিশু নিহত হয়েছেন।
সোমবার বিকেলে উপজেলার ফরিদপুর গ্রামে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত রুকাইয়া খাতুন (২) একই গ্রামের আব্দুস সালামের মেয়ে।
স্থানীয়রা জানান, বিকেলে রাস্তার পাশে খেলছিল শিশু রুকাইয়া। এসময় রাস্তা পার হতে গেলে দ্রুতগামী আরএনবি ইটভাটার একটি পাওয়ার ট্রলি তাকে চাপা দেয়। এতে গুরুতর আহত হয় সে। তাকে উদ্ধার করে আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ভোলা প্রতিনিধি জানান, জেলার লালমোহন উপজেলায় দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংর্ঘষের ঘটনায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন, রুবেল চন্দ্র মজুমদার (২৩) ও মো. জাকির (৩৫)। এছাড়াও এ ঘটনায় মো. রাকিব (২২) ও খোকন কবিরাজ (৪৫) নামে দুইজন আহত হয়ে ভোলা সদর হাসপাতলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নিহত রুবেল লালমোহন পৌর ২নং ওয়ার্ডের বাবুল চন্দ্র মজুমদারের ছেলে ও জাকির চরফ্যাশন উপজেলার দুলার হাট থানার নীল কমল ইউনিয়নের বাসিন্দা বশির আলমের ছেলে বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিকেলের দিকে রুবেল চন্দ্র মজুমদার খোকন কবিরাজকে নিয়ে লালমোহন ও জাকির রাকিবকে নিয়ে ভোলা যাচ্ছিলেন। উপজেলার কালমা ইউনিয়নের আলম বাজার এলাকায় পৌঁছালে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংর্ঘষের ঘটনায় ঘটে। এতে রুবেল চন্দ্র মজুমদার ও আরেক চালক মো. জাকিরসহ দুই মোটরসাইকেলে থাকা রাকিব ও খোকন কবিরাজ আহত হয়।
পরে পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে রুবেল চন্দ্র মজুমদারের মৃত্যু হয় এবং সন্ধ্যার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মো. জাকিরের মৃত্য হয়।
পাবনা প্রতিনিধি জানান, জেলার ঈশ্বরদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় এক স্কুলছাত্র ও এক বৃদ্ধ রিকশাচালক নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৮ জুন) দুপুর ১২টায় পাকশী খানকা শরীফের রাস্তায় ও সাড়ে ১২টায় গোকুলনগর চক্ষু হাসপাতালের সামনের সড়কে দুর্ঘটনা দুটি ঘটে।নিহতরা হলেন, স্কুলছাত্র ওবায়দুল্লাহ (১২) ও আফজাল হোসেন (৬০)।
পাকশী ইউপি সদস্য মনোয়ার হোসেন লিটন জানায়, পাকশীর বাঘইল চেয়ারম্যান পাড়ার ভ্যানচালক আফাজ উদ্দিন তার স্কুলপড়ুয়া ছেলে ওবায়দুল্লাহকে ভ্যানে নিয়ে পাকশী বাজারে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে পাকশী খানকা শরীফের রাস্তায় বালুবোঝাই একটি ট্রাক্টর তার ভ্যানকে চাপা দিলে ওবায়দুল্লাহ ট্রাক্ট্রের চাকার নিচে পড়ে। এতে আফাজ উদ্দিনও গুরুতর আহত হয়।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেন খোকন জানান, ওবায়দুল্লাহকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পূর্বেই রাস্তায় সে মারা যায়, তার বাবার অবস্থাও গুরুতর।
অপরদিকে, ঈশ্বরদী-লালপুর সড়কের গোকুলনগরের চক্ষু হাসপাতালের সম্মুখে অপর সড়ক দুর্ঘটনায় রিকশাচালক আফজাল হোসেন নিহত হয়েছেন।
আফজাল হোসেনের ছেলে জানান, তার বাবা অটোরিকশা চালিয়ে ঈশ্বরদী শহরে আসার পথে একটি মোটরসাইকেল রিকশায় ধাক্কা দেয়। ওই সময় অটোরিকশার ব্যাটারি বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঈশ্বরদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহাউদ্দীন ফারুকী এ দুটি দুর্ঘটনার সংবাদ নিশ্চিত করে জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু নিহতের ঘটনায় স্থানীয়রা ট্রাকসহ চালক মিন্টুকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে।
অটোরিকশার চালক আফজাল হোসেন নিহতের ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি। এ ব্যাপারে থানায় দুটি ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।