‘ইউনাইটেডের কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে আগুন’, তদন্ত প্রতিবেদন জমা
রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে করোনা আইসোলেশন ইউনিটে আগুনের সূত্রপাত হয় ইউনিটের এসিতে বৈদ্যুতিক গোলাযোগ থেকে। এ ঘটনায় ইউনাইটেড হাসপাতালের অবহেলা ও গাফিলতি আছে উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তদন্ত কমিটি।
বুধবার রাতে প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি। ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে প্রতিবেদনটি মহাপরিচালকের কাছে জমা দেয়া হয়েছে। প্রটোকল অনুযায়ী মহাপরিচালক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে প্রতিবেদনটি জমা দেবেন।
এর আগে গত ২৭ মে রাতে রাজধানীর গুলশান-২ এর ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আগুন লাগে। আগুনে ৫ জন মারা যান। এর মধ্যে ২ জনের করোনা পজিটিভ ছিল। নিহতরা হলেন- রিয়াজুল আলম (৪৫), খাদেজা বেগম (৭০), ভের্নন এন্থনি পল (৭৪), মো. মনির হোসেন (৭৫) ও মো. মাহাবুব (৫০)।
ওই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে ফায়ার সার্ভিস।
সূত্র জানায়, তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউনাইটেডের করোনা আইসোলেশন ইউনিটটিতে ত্রুটিপূর্ণ জেনেও পুরনো এসি বসানো হয়। এসির বৈদ্যুতিক গোলযোগে আগুন লাগে।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, করোনা ইউনিটটি অস্থায়ীভাবে পারটেক্স দিয়ে তৈরি ছিল। এ ছাড়া সেখানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ অতি দাহ্য অনেক পদার্থ রাখা ছিল। তাই আগুন লাগার সাথে সাথে এটি মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। তখন ইউনিটের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা রোগীদের বাঁচানোর চেষ্টা না করেই নিজের প্রাণ বাঁচাতে বেরিয়ে যান।
সম্প্রতি প্রতিবেদন সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের উপ-পরিচালক ও তদন্ত কমিটির প্রধান দেবাশীষ বর্ধন জাগো নিউজকে বলেন, তদন্তে ইউনাইটেডের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার খুঁটিনাটি, হাসপাতালে কী ছিল, কী ছিল না সেগুলো উঠে এসেছে। এটি তৈরিতে নিহত ৫ জনের পরিবারের সদস্য, প্রত্যক্ষদর্শী, ইউনাইটেড হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটের কর্তব্যরত চিকিৎসক-নার্স, সিকিউরিটি গার্ড ও বিদ্যুৎ বিভাগের মোট ২০ জনের জবানবন্দী নেয়া হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি অপমৃত্যুর মামলা করে। কিন্তু আগুনে নিহত ভের্নন এন্থনি পলের পরিবারের পক্ষ থেকে ইউনাইটেড হাসপাতালের বিরুদ্ধে একটি ‘অবহেলাজনিত মৃত্যুর’ মামলা করা হয়। মামলায় ইউনাইটেড হাসপাতালের চেয়ারম্যান, এমডি, সিইও, পরিচালক, করোনা ইউনিটে সে সময় কর্মরত ডাক্তার-নার্স, সেফটি ও সিকিউরিটি কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় পুলিশেরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। চিকিৎসাধীন রোগীসহ ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল চেয়ে গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রেদোয়ান আহমেদ রানজীব ও ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ হাইকোর্টে রিট করেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।