করোনার ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে প্রতারণাসহ কয়েকটি অভিযোগে গ্রেফতার রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ বর্তমানে গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলার খবর পাওয়ার কথা জানায় র্যাব।গ্রেফতারের পর গত ১৬ জুলাই সাহেদকে আদালতে হাজির করা হয়। ওই দিন শুধু রিজেন্ট হাসপাতালে করোনার ভুয়া রিপোর্ট প্রদান সংক্রান্ত মামলাতেই গ্রেফতার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয় তাকে।
গত ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালে র্যাবের অভিযানের পর হাসপাতালের সবকটি শাখাই বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরদিন র্যাবের পক্ষ থেকে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়, যেখানে সাহেদকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।সাহেদসহ এই মামলায় এখনও পর্যন্ত এজাহারভুক্ত ১১ আসামি গ্রেফতার হয়েছেন। এর মধ্যে রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজ ও সাহেদের অন্যতম সহযোগী তারেক শিবলী রিমান্ডে আছেন।
এসব মামলায় সাহেদসহ আসামিদের বিরুদ্ধে মূলত তিন ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছে। চিকিৎসায় অবহেলার মাধ্যমে জনজীবনকে বিপন্ন করে তোলা, জালজালিয়াতির মাধ্যমে করোনার ভুয়া রিপোর্ট প্রদান এবং ভুয়া রিপোর্ট প্রদানের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ।এসব অপরাধের জন্য তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৬, ৪০৭, ৪৬৫, ৪৬৮, ৪৭১ ও ২৬৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব ধারার অধিকাংশই জামিন অযোগ্য। তবে এসব ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হলেও সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড বলে জানিয়েছেন মামলার আইনজীবীরা।
কারণ, ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি অনুযায়ী ৪০৬ ধারায় অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ, যার শাস্তি সর্বোচ্চ তিন বছর; ৪৬৫ ধারা অনুযায়ী জালিয়াতির শাস্তি সর্বোচ্চ দুই বছর, ৪৬৮ ধারা অনুযায়ী প্রতারণার উদ্দেশ্যে জালিয়াতির শাস্তি সর্বোচ্চ সাত বছর, ৪৭১ ধারা অনুযায়ী জালিয়াতির সমান শাস্তি এবং ২৬৯ ধারা অনুযায়ী অবহেলামূলক কাজ দ্বারা জীবন বিপন্নকারী রোগ বিস্তারের সম্ভাবনার জন্য সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদণ্ডের সুযোগ রয়েছে। তাই এসব অভিযোগের যে কয়টি প্রমাণিত হোক না কেন, একত্রে শাস্তি চললে সাহেদকে সর্বোচ্চ সাত বছরের সাজাই ভোগ করতে হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।
সাহেদকে গ্রেফতারের পর র্যাব জানিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে ৩২টি মামলার সন্ধান তারা পেয়েছেন। তাছাড়া আদালত সূত্রে জানা গেছে, সাহেদের বিরুদ্ধে একটি মামলায় ১০ বছর আগেই ছয় মাস কারাদণ্ড হয়েছিল। ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত সেই মামলায় সাজা পরোয়ানা জারির ১০ বছরের মধ্যেও তাকে গ্রেফতার করা হয়নি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।