ইসি স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ালে জাতির উপকার: টিআইবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২৭শে আগস্ট ২০২০ ১০:৫৩ অপরাহ্ন
ইসি স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ালে জাতির উপকার: টিআইবি

প্রার্থিতা বাতিলের সরাসরি যে ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) রয়েছে, ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আইন ২০২০’ এর খসড়ায় তা বিলোপ করার খবরে বিস্ময় প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।এবিষয়ে বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলছে, ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২’ এর ৯১(ই) ধারায় কোনো প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের সরাসরি ক্ষমতা বাতিল করে নতুন খসড়া তৈরিতে আমরা বিস্মিত।’

‘দেশের মানুষের মধ্যে যখন নির্বাচন নিয়ে অনাগ্রহ ও আস্থার সংকট বাড়ছে তখন নিজেকে আরও দুর্বল করার আত্মঘাতী এমন উদ্যোগ কার স্বার্থে? এ জাতীয় অভূতপূর্ব স্বেচ্ছাসমর্পণমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে অর্পিত সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে নিজেদের অযোগ্য মনে করলে প্রধান কমিশনারসহ সকল কমিশনারগণ স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ালে জাতি উপকৃত হবে’─ বলা হয় টিআইবির বিবৃতিতে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৯১ই ধারার ১ ও ২ উপধারা অনুযায়ী নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে, তা তদন্ত করে দেখা এবং তদন্তে তা প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করার নির্বাচন কমিশনের হাতে সরাসরি ক্ষমতা রয়েছে।’

সেটি কী যুক্তিতে সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে তার যে ব্যাখ্যাই কমিশন দিক না কেনো, এটি যে ভালো কোনো উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে না বরং কমিশনকে সম্পূর্ণভাবে অকার্যকর করে দেওয়ার হীন চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই না।’টিআইবি বলছে, নিজেরা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে এই ধারা প্রয়োগ করার সৎসাহস রাখেন না বিধায়, মাথা ব্যথার কারণে মাথা কেটে ফেলার অপপ্রয়াস এই উদ্যোগ কি-না এই প্রশ্ন ওঠাও স্বাভাবিক।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘জনগণের কাছে কমিশনের গ্রহণযোগ্যতা কোন অবস্থানে আছে সেটা অনুধাবন করতে পারাটা এখন তাদের নৈতিক ও সাংবিধানিক দায়িত্ব। জনপ্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটিয়ে নির্বাচন কমিশনের যেখানে তার সাংবিধানিক মর্যাদা ও সুনাম পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট থাকা উচিত, সেখানে সম্ভবত জেনেবুঝেই তারা রাজনৈতিক ক্ষমতার কাছে নিজেদেরকে আত্মদানমূলক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এ জাতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।’

ইফতেখারুজ্জামান মনে করছেন, ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২’ একটি ঐতিহাসিক দলিল। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার অনন্য স্মারক। যৌক্তিক কোনো কারণ ছাড়া তার পরিবর্তন কেন দরকার পড়ছে, তা তাদের বোধগম্য নয়।নির্বাচন কমিশন বোধহয় ভুলতে বসেছে যে, এটা একটি স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়ার কথা, কারো আজ্ঞাবহ নয়। দেশ ও জাতির স্বার্থে বর্তমান কমিশনের সুমতি যত দ্রুত ফিরবে ততই মঙ্গল’─ যোগ করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।

স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান নির্বাচন আইন, ২০২০’ নামে বিলের যে খসড়া নির্বাচন কমিশন প্রস্তুত করেছে, সেটি নিয়েও ভেবে দেখতে বিবৃতিতে আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “নির্বাচন কমিশনের উচিত ‘নির্বাচন কমিশন’ নামটিকে আর কলঙ্কিত না করে ইতোমধ্যে জনসাধারণের মধ্যে তাদের প্রতি যে অনাস্থার সৃষ্টি হয়েছে তা উপলব্ধি করে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ানো।”