কাশ্মীর নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত ‘অসাংবিধানিক’

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার ৫ই আগস্ট ২০১৯ ০২:৪৮ অপরাহ্ন
কাশ্মীর নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত ‘অসাংবিধানিক’

বিশেষ মর্যাদা তুলে নেওয়া হল জম্মু-কাশ্মীরের। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে  জম্মু-কাশ্মীরকে পুনর্গঠিত করে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হল। একটি জম্মু কাশ্মীর  অন্যটি লাদাখ। এই সিদ্ধান্তের প্রবল বিরোধিতা করেন কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাংসদরা। সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে কাশ্মীর নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। এই বৈঠককে ঘিরে এ দিন সকাল থেকেই জল্পনা ছিল তুঙ্গে। কী সিদ্ধান্ত হতে চলেছে বৈঠকে সে দিকে তাকিয়ে ছিল গোটা দেশ। অবশেষে সেই জল্পনার অবসান হল রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিবৃতির পর। ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার ঘোষণার পরই উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্যসভা। অমিত শাহের বিবৃতির প্রবল বিরোধিতা করেন কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ-সহ সমস্ত বিরোধী দলের নেতারা। আজাদ বলেন, “গণতন্ত্রকে আজ খুন করল বিজেপি।”

গুলাম নবি আজাদ যখন এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করছিলেন তাঁকে থামিয়ে দিয়ে অমিত শাহ বলেন, “১৯৫২ ও ১৯৬২ সালে কংগ্রেস একই পদ্ধতিতে ৩৭০ ধারার সংশোধন করেছিল। অতএব বিরোধিতা না করে আমাকে বলতে দিন। আপনাদের সব সন্দেহ এবং ভুল বোঝাবুঝির বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।” এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সংসদের মেঝেতেই ধর্নায় বসে পড়ে কংগ্রেস, পিডিপি, তৃণমূল কংগ্রেস এবং ডিএমকে-র সাংসদরা। নিজের জামা ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানান রাজ্যসভায় পিডিপি সাংসদ ফৈয়াজ আহমেদ মীর। সংবিধানের কপি ছিঁড়ে ফেলার জন্য পিডিপি সাংসদ ফৈয়াজ ও নাজির আহমেদকে  সংসদ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু।

পিডিপি নেত্রী টুইট করে এই সিদ্ধান্তের প্রবল বিরোধিতা করে বলেন, “আজ ভারতীয় গণতন্ত্রের কালো দিন। ৩৭০ ধারাকে বাতিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের। এটা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক।” তিনি আরও বলেন, “কেন্দ্রের পরিকল্পনাটা এখন স্পষ্ট। রাজ্যের মানুষকে ভয় দেখিয়ে জম্মু-কাশ্মীর দখল করতে চাইতে তারা। কাশ্মীরকে যে কথা দেওয়া হয়েছিল, তা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে ভারত।”  অন্য দিকে, ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা এক বিবৃতি জারি করে জানান, এটা একটা হতাশাজনক সিদ্ধান্ত। কাশ্মীরের মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হল।

কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, পিডিপি, ডিএমকে, সমাজবাদী পার্টি, জেডি (ইউ) এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করলেও কেন্দ্রের এই প্রস্তাবকে কিন্তু সমর্থন করেছে বহুজন সমাজ পার্টি, বিজু জনতা দল, ওয়াইএসআর কংগ্রেস, তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি, এআইএডিএমকে, আম আদমি পার্টি। প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রশংসা করে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, “একটা ঐতিহাসিক ভুলের সংশোধন হল। সংবিধানের ৩৬৮ ধারাকে না মেনে পিছন দরজা দিয়ে ৩৫এ ধারাকে আনা হয়েছিল।”  

ইনিউজ ৭১/এম.আর