‘হত্যার হুমকি’র বয়ান তৈরি করছে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার ২০শে মে ২০২২ ০৮:৩৯ অপরাহ্ন
‘হত্যার হুমকি’র বয়ান তৈরি করছে বিএনপি

সফলভাবে পদ্মাসেতু নির্মাণ বিষয়ে শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্য নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বিএনপি নেতৃবৃন্দ দূরভিসন্ধিমূলকভাবে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।


শুক্রবার গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের দূরভিসন্ধিমূলক, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতেই এই বিবৃতি প্রদান করেন কাদের।


ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জনকল্যাণমুখী সৎ-সাহসী ও দেশপ্রেমিক নেতা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রই একটি জাতিকে পিছিয়ে দিতে পারে না- বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও পদ্মাসেতু তার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। সকল প্রতিবন্ধকতা ডিঙ্গিয়ে সফলভাবে পদ্মাসেতু নির্মাণ নিয়ে শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্য নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বিএনপি নেতৃবৃন্দ দূরভিসন্ধিমূলকভাবে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে। এমনকী বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তথাকথিত ‘হত্যার হুমকি’র বয়ান তৈরি করছে।’


তিনি বলেন, বিরোধী পক্ষকে দমন ও পীড়নের রাজনীতি আওয়ামী লীগ কোনোদিন করে নাই। বরং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে ১৫ আগস্ট স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে বিএনপির হাত ধরেই হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষকে নির্মুল করার অপরাজনীতি শুরু হয়। আর তারই ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ বার বার আক্রমণের শিকার হয়েছে।


আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, চিহ্নিত একটি মহলটি ক্রমাগতভাবে দেশের স্বার্থ ও জনকল্যাণ বিরোধী বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা তাঁর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দেশবিরোধী এই গোষ্ঠীর মুখোশ উন্মোচন ও জনগণকে সতর্ক করতে চেয়েছেন।


তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ভালো করেই জানা উচিত যে, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যদি খালেদা জিয়ার মৃত্যুই কামনা করতেন তাহলে উচ্চ আদালত কর্তৃক একাধিকবার জামিন বাতিল হওয়ার পরেও দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে ঘরে রেখে উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করতেন না; বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করার সুযোগ দিতেন না।


ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের একটি অনন্য মাইলফলক  হলো নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ। আজকে যারা রাজনৈতিক স্বার্থে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতাকে অস্বীকার করার অপচেষ্টা চালান এবং বাংলাদেশে শ্রীলঙ্কার পরিণতি দেখতে সুপ্ত বাসনা লালন ও ষড়যন্ত্র করেন তাদেরকে বলতে চাই- পদ্মাসেতু শুধুমাত্র একটি সেতু না; এটি জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্জিত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতার স্মারক।’


তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার পদ্মাসেতু নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করার পর থেকেই বিএনপি ও তার দোসররা এর বিরুদ্ধে ক্রমাগত ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় এবং তারা চক্রান্ত করে বিদেশি অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়। এরপরও শেখ হাসিনা দেশি অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তখন  বেগম  খালেদা জিয়াসহ একটি চিহ্নিত মহলের মন্তব্যগুলো ছিল কা-জ্ঞান বিবর্জিত ও দূরভিসন্ধিমূলক। এসব ষড়যন্ত্র ও রাজনৈতিক প্রোপাগা-া শুধু সরকার বিরোধিতাই ছিল না বরং দেশদ্রোহিতার শামিল।’


আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনা একজন স্বপ্নবান মানুষ, যিনি বাংলার মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে নিরলসভাবে স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে বাংলার মানুষ শেখ হাসিনার মহিমান্বিত নেতৃত্বকে মূল্যায়ন করবে। দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি-সমৃদ্ধি নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পর শেখ হাসিনা ব্যতিত আর কোন নেতৃত্বই অগাধ দেশপ্রেমের সাথে ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে কোনো সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক দর্শন ও পরিকল্পনা নিয়ে বাংলার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ করেননি।


তিনি বলেন, বাঙালির ভাগ্যোন্নয়নের সংগ্রামে একমাত্র শেখ হাসিনাই পরিপূর্ণ আত্মনিবেদন করেছেন। এ কথা আজ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত যে, শেখ হাসিনা রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা মানেই এদেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন হওয়া। ২০০৮ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর একের পর এক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে চলেছে।


ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ শিষ্টাচারের কথা বলছেন। আমি তাকে বলতে চাই, বঙ্গবন্ধুকন্যাকে হত্যার উদ্দেশ্যে একুশে আগস্টের নারকীয় গ্রেনেড হামলাসহ অসংখ্যবার হত্যাচেষ্টার সময় কোথায় ছিল আপনাদের তথাকথিত শিষ্টাচার? এমনকী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়োগ করে অপরহণ ও প্রাণনাশের অপচেষ্টা পর্যন্ত চালানো হয়েছে।