বরিশাল সিটি নির্বাচন: প্রতীক পেয়ে প্রচারণায় প্রার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
এইচ.এম.এ রাতুল, জেলা প্রতিনিধি, বরিশাল।
প্রকাশিত: শুক্রবার ২৬শে মে ২০২৩ ০৬:৩৪ অপরাহ্ন
বরিশাল সিটি নির্বাচন: প্রতীক পেয়ে প্রচারণায় প্রার্থীরা

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পরপরই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন প্রার্থীরা। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে প্রথমে মেয়র প্রার্থীদের হাতে প্রতীক তুলে দেন রিটার্নিং অফিসার মো. হুমায়ুন কবির। 


প্রতীক পাওয়া প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত (নৌকা), জাতীয় পার্টির ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন তাপস (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম (হাতপাখা), জাকের পার্টি মিজানুর রহমান বাচ্চু (গোলাপ ফুল), স্বতন্ত্রপ্রার্থী কামরুল আহসান রূপণ (টেবিল ঘড়ি), আলী হোসেন (হরিণ) ও আসাদুজ্জামান (হাতি)। রিটার্নিং অফিসার বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারবেন। ১২ জুন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে। 


এর আগে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) ছিল প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এদিন ২১ কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। ফলে এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন, সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদে ৪২ জন ও কাউন্সিলর পদে ১১৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।


বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে প্রতীক প্রতীক বরাদ্দের পর সব প্রার্থী এবারের নির্বাচনে বিজয়ের প্রত্যাশা করছেন। ভোটের লড়াইয়ে জয়ী হলে বরিশালের উন্নয়নসহ নানা কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার কথাও বলেন প্রার্থীরা। প্রায় সকল প্রার্থীর সমর্থকরা নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। প্রতীক পাওয়ার পর বিভিন্ন স্থানে কাউন্সিলর ও মেয়র প্রার্থীরা খন্ড খন্ড প্রচারণা শুরু করে। এছাড়া দুপুরের পর থেকেই যার যার প্রতীক নিয়ে নগরীতে শুরু হয়েছে মাইকিং। 


এছাড়া শুক্রবার বেলা ১১টার পর নগরীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মেয়র প্রার্থীর  পোস্টার লাগাতে দেখা গেছে তাদের কর্মীদের। তারা বলেন, রাজনৈতিক দলের প্রার্থীর ক্ষেত্রে দলীয় প্রতীক থাকায়, তাদের প্রতীক আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল। তাই তারা আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন, প্রতীক বরাদ্দের পর এখন আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে শহরের বিভিন্ন সড়কে পোস্টার লাগানোর কাজটি শুরু করেছেন। তবে স্বতন্ত্র মেয়র এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রতীক শুক্রবার চুড়ান্ত হওয়ায়, তাদের প্রতীকসহ পোস্টার লাগাতে কিছুটা বিলম্ব হবে বলে জানিয়েছেন স্ব-স্ব প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যরা।


এদিকে মেয়র প্রার্থীরা প্রতীক পাওয়ার পার আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের পরিচালনা কমিটি ও কর্মীরা নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। অপরদিকে বরিশাল সিটি নির্বাচনে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে গৌরনদী পৌরসভা মিলনায়তনে বিশেষ বর্ধিত সভা শুরু হয় বিকাল ৪টায়। সেখানে সিটি নির্বাচনে নৌকার বিজয়ে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। তবে ওই সভায় নৌকার প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত বা তার কোন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেননি। 


বরিশাল সিটি করপোরেশনের ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৮৯ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮০৯ জন। নির্বাচনে ৩০টি ওয়ার্ডে ১২৬ ভোট কেন্দ্র ৮৯৩টি ভোট কক্ষ থাকবে।


এদিকে আগামী ১২ জুন অনুষ্ঠিতব্য বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে দ্বিতীয় পর্যায় ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) তিনদিনের কারিগরি প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার সম্মেলন কক্ষে এ প্রশিক্ষণ শেষ হয়।


বরিশাল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান মুন্সি বলেন, প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে ৫০ জন অংশ নিয়েছিলেন। প্রথম পর্যায়ে ৮৫ জনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল জেলা নির্বাচন কমিশন। সব মিলিয়ে ১৩৬ জন প্রশিক্ষণার্থীকে ১২ জুনের নির্বাচনে প্রত্যেকটি কেন্দ্রে ইভিএম সুরক্ষায় ও পোলিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে।