জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম ভুল বিপাকে ভূরুঙ্গামারীর এক বীর মুক্তিযোদ্ধা

নিজস্ব প্রতিবেদক
শামসুজ্জোহা সুজন , উপজেলা প্রতিনিধি, (ভূরুঙ্গামারী) কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ৭ই মে ২০২৪ ০২:৪৬ অপরাহ্ন
জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম ভুল বিপাকে ভূরুঙ্গামারীর এক বীর মুক্তিযোদ্ধা

জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম বিভ্রাটের কারণে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার এক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের সদস্যরা বিপাকে পড়েছেন। এতে তারা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম শ্রী তরনী কান্ত রায়। তিনি ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের আঙ্গারীয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার ডাক নাম ললিত। তিনি মহেন্দ্র কান্ত রায়ের ছেলে।


বীর মুক্তিযোদ্ধার তরনী কান্ত রায় নাম সংশোধনের জন্য উপজেলা নির্বাচন অফিসে আবেদন করেছেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে দীর্ঘদিনেও তা সংশোধন হয়নি। নির্বাচন অফিস বলছে নাম সংশোধনের পুরো প্রক্রিয়াটি তাদের এখতিয়ারে নেই। এটা জাতীয় নির্বাচন অফিস থেকে করা হয়ে থাকে।


জানাগেছে, ভারতীয় মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় তরনী কান্ত রায়ের নম্বর-৪০৪৯৩, লাল মুক্তি বার্তা নম্বর-৩১৬০৪০৫৪৯ ও বাংলাদেশ বেসামরিক গেজেট নম্বর-১১৮৫। সব তালিকায় তার নাম তরনী কান্ত রায় রয়েছে। এছাড়া জন্ম নিবন্ধন সনদ ও ১৯৭২ সালে মেট্রিকুলেশন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা এই বীর মুক্তিযোদ্ধার টেবুলেশন সীটে (নম্বর পত্রে) নাম তরনী কান্ত রায় রয়েছে।


বীর মুক্তিযোদ্ধা তরনী কান্ত বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রে আমার নাম তরনী কান্ত রায় এর পরিবর্তে ভুলবশত ডাক নাম ললিত বর্মণ লিপিবদ্ধ হয়েছে। প্রথম দিকে জাতীয় পরিচয়পত্রের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারিনি। গৃহ ঋণের জন্য আবেদন করেছি। নাম বিভ্রাটের কারণে ঋণ পাচ্ছিনা। নাম বিভ্রাটের কারণে অন্যান্য সুবিধাও পাচ্ছিনা।


তিনি আরও বলেন, নাম সংশোধনের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, ইউপি চেয়ারম্যান, প্রধান শিক্ষকের প্রত্যয়ন পত্র ও অন্যান্য প্রমাণপত্র সহ উপজেলা নির্বাচন অফিসে আবেদন করেছি। যার ক্রমিক নম্বর এনআইডিসিএ ১১৮৪৮৩৫১। আবেদন করার দুই বছর হয়েছে। নাম সংশোধন না হওয়ায় স্ত্রী, তিন ছেলে, ছেলের বউ ও নাতী-নাতনীদের নিয়ে দুঃচিন্তায় রয়েছি।


তরণী কান্তের স্ত্রী জয়ন্তী রানী বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম সংশোধন করতে না পারায় লোকটা চিন্তায় চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া করেন না। সবসময় দুঃচিন্তা করেন। তার কিছু হয়ে গেলে আমাদের কী হবে? প্রতিবেশী আয়নাল হক (৬০), শংকর বিশ্বাস (৫০) ও বিসাদী বর্মণ (৪৫) বলেন, তরনী কান্তের ডাকনাম ললিত। তরনী কান্ত ও ললিত একই ব্যক্তি।


উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মহি উদ্দিন আহমেদ বলেন, তিনি একজন প্রকৃত ফ্রিডম ফাইটার (এফএফ)। তিনি ৬ নং সেক্টরের অধীনে ঠাকুরগাঁয়ে যুদ্ধ করেছেন। জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুলবশত তার ডাক নাম ললিত বর্মন লিপিবদ্ধ হয়েছে। নাম সংশোধনের জন্য প্রত্যায়ন পত্র দেয়া হয়েছে।


উপজেলা নির্বাচন অফিসার সাইফ আহমেদ নাসিম বলেন, আমি এ উপজেলায় সদ্য যোগদান করেছি। এবিষয়ে তেমন কিছু জানিনা।উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম ফেরদৌস বলেন, বিষয়টি কেউ আমাকে অবগত করেনি। অবগত করলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।