কর্মস্থলে ফিরছে দখিনের মানুষ, নৌবন্দরে ভীড়

নিজস্ব প্রতিবেদক
এইচ.এম.এ রাতুল, জেলা প্রতিনিধি, বরিশাল।
প্রকাশিত: শুক্রবার ৬ই মে ২০২২ ০৯:৫৭ অপরাহ্ন
কর্মস্থলে ফিরছে দখিনের মানুষ, নৌবন্দরে ভীড়

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে স্বজনদের সাথে ঈদ আনন্দ কাটাতে ঘরে ফেরা মানুষ কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে। ঈদের দ্বিতীয় দিন বুধবার অনেকে কর্মস্থলে ফিরলেও বৃহস্পতি ও শুক্রবার বরিশাল নদীবন্দরে ঢাকাগামী মানুষের ঢল নামে। বিকাল থেকেই ঢাকা-বরিশাল নৌ রুটের বিলাসবহুল লঞ্চগুলোর ডেক পরিপূর্ণ হয়ে যায়। বুধবার বরিশাল নদীবন্দরে তেমন ভিড় না থাকলেও বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুপুর থেকেই ভিড় বাড়তে থাকে বন্দরে। আর যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে লঞ্চ কর্তৃপক্ষও আগে থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। এদিকে যাত্রীদের নির্বিঘেœ কর্মস্থলে ফিরতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরাও রয়েছে। তবে লঞ্চে জায়গা না পেয়ে অনেকে আবার বিকল্প পথে ঢাকার উদ্দেশ্যে বরিশাল ছেড়ে গেছে। অপরদিকে বরিশাল নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে দেশের বিভিন্ন জেলার উদ্দেশ্যে যাত্রী নিয়ে বাস ছেড়ে গেছে। শুক্রবার বন্ধের দিন বাস টার্মিনাল কানায় কানায় পূর্ণ ছিল।

 


বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বরিশাল নৌবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, রাতে বরিশাল নদীবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য ৯টি লঞ্চ নোঙর করা রয়েছে। প্রতিটি লঞ্চেই যাত্রী ছিল ভরা। ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার আগেই রাজধানীতে ফিরছেন এসব মানুষ। পারাবাত-১০, পারাবাত-১২, সুন্দরবন-১১, কুয়াকাটা-২, কীর্তণখোলা-১০, সুরভী-৭, অ্যাডভেঞ্চার-১, প্রিন্স আওলাদ-১০ ও মানামী লঞ্চ ঘুরে তৃতীয় শ্রেণি অর্থাৎ ডেকে অতিরিক্ত যাত্রী দেখা গেছে। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সোলায়মান আহম্মেদ জানান, দীর্ঘ দুই বছর পর এবার পরিবার পরিজন নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে এসেছিলেন। কষ্ট হলেও ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে পেরে তিনি বেশ খুশি।


একদিন বাড়তি ছুটি নিয়ে গ্রামে ফেরা আব্দুল হালিম জানান, দিন যত যাবে যানবাহনে চাপ ততো বাড়বে। তাই ঈদের তৃতীয় দিন হলেও নিরিবিলি ঢাকায় যাওয়ার জন্য লঞ্চে উঠেছি পরিবার পরিজন নিয়ে। কিন্তু ডেকে জায়গা না পাওয়ায় কেবিনের সামনে বসেছি।


এদিকে শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বরিশাল নৌবন্দরে গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রার জন্য বন্দরে ১১টি লঞ্চ নোঙর করা রয়েছে। কুয়াকাটা-২, কীর্তনখোলা-২ ও ১০, সুরভী-৮ ও ৯, সুন্দরবন-১০, পারাবত ৯, ১১ ও ১০, মানামী এবং এ্যাডভেঞ্জার-১ লঞ্চ ঘুরে দেখা গেছে তৃতীয় শ্রেনী অর্থাৎ ডেকের পুরোটা পরিপূর্ণ। যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিরাপদে কর্মস্থলে ফিরতে আগে ভাগে তারা এসে লঞ্চে উঠেছেন।


বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যাতে কোন লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে না পারে সেজন্য নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। আমরা নদীবন্দরে বারবার টহল দিচ্ছি। যাত্রীদেরও সতর্ক করা হচ্ছে। তবে কর্মস্থলে ফিরতে পর্যাপ্ত লঞ্চ ঘাটে রয়েছে বলেও জানান তিনি। 



অপরদিকে বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালেও ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে। শুক্রবার সকাল থেকেই টার্মিনালে যাত্রীদের ভীড় বাড়তে শুরু করে। ঢাকা-বরিশাল রুটের বাসগুলোতে টিকিট না পেয়ে বেশিরভাগ মানুষ বিকল্প উপায়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। কেউ কেউ মাইক্রোবাসযোগে মাওয়া হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন। এখানেও যাত্রীদের কর্মস্থলে নির্বিঘেœ ফিরতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তৎপর থাকতে দেখা গেছে।



বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার শেখ মোহাম্মদ সেলিম বলেন, বাস টার্মিনাল ও নদীবন্দর এলাকায় যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।