নওগাঁয় হিজাব বিতর্ক, এবার ইউটিউবার সালাউদ্দীন জেলহাজতে

নিজস্ব প্রতিবেদক
রিফাত হোসাইন সবুজ, জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ১৮ই আগস্ট ২০২২ ১০:২৭ পূর্বাহ্ন
নওগাঁয় হিজাব বিতর্ক, এবার ইউটিউবার সালাউদ্দীন জেলহাজতে

নওগাঁর মহাদেবপুরে হিজাব নিয়ে গুজব ছড়িয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও মানহানির অভিযোগে সালাউদ্দীন আহমেদ নামে আরো এক ইউনিউবারকে জেল হাজাতে পাঠিয়েছে আদালত। সালাউদ্দীন আহম্মেদ ইউটিউব চ্যানেল(এস,টিভি) এর নওগাঁর পোরশা মালিক। বুধবার বিকেলে নওগাঁ জেলা দায়রা জজ আদালত -এ হাজির হয়ে তিনি জামিনের আবেদন করলে বিজ্ঞ বিচারক এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার জামিন নাকচ করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। 


নওগাঁর মহাদেবপুরের দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষিকা আমোদিনী পালের দায়ের করা মামলায় তিনি হাইকোর্ট থেকে ৪ সপ্তাহের আগাম জামিনে ছিলেন তিনি। একই সময়ে আদালত ওই স্কুলর সহকারী শিক্ষিকা আমোদিনী পাল ও সহকারী শিক্ষক বদিউল আলমকে মামলা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ প্রদান করে।


এর আগে একই মামলায় নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণ, দৈনিক নওরোজের মহাদেবপুর উপজেলা প্রতিনিধি কিউ এম সাঈদ টিটু (৫০) ও মহাদেবপুর দর্পণ নিউজ পোর্টালের প্রতিনিধি সামসুজ্জামান মিলন (৩৮)কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।


উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল মহাদেবপুর উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির কমপক্ষে ১৮ জন শিক্ষার্থীকে স্কুল ড্রেস পরে না আসার কারেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা আমোদিনী পাল তাদের শাসন করেন। ওই বিষয়টি পরে হিজাব কান্ডে রুপ নেয়।


এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ৭টি সুনির্দিষ্ট কারণ ও সুপারিশ উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা আমোদিনী পাল হিজাবের কারণে নয়; নির্ধারিত স্কুলড্রেস না পরার কারণেই শিক্ষার্থীদের মারধর করেছিলেন। একই দিনে বদিউল আলম নামে আরেক শিক্ষকও মারধর করেছিলেন শিক্ষার্থীদের। অথচ প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত শুধু শিক্ষিকা আমোদিনী পালকে শোকজ করেন। এই ঘটনা তদন্ত কমিটির কাছে উদ্দেশ্যমূলক মনে হয়েছে। শুধু শিক্ষিকা আমোদিনী পালকে শোকজ করায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। এ ছাড়া প্রতিবেদনে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে শিক্ষার্থীদের প্রহার করায় শিক্ষিকা আমোদিনী পাল ও শিক্ষক বদিউল আলমের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। 


গুজব ছড়ানোর প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, প্রধান শিক্ষক ধরনী কান্ত, শিক্ষিকা আমোদিনী পাল ও ম্যানেজিং কমিটির মধ্যে দীর্ঘদিনের ত্রিমুখী দ্বন্দ্ব চলছিলো। যা গুজব ছড়াতে ব্যবহার করা হয়েছে। শুধু তাই নয়; গুজব ছড়ানোর পেছনে স্থানীয় কিছু সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষের নাম উঠে এসেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতেও সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি।


তবে হিজাব কান্ডের মিথ্যা তথ্য পরিবশেন ও গুজব ছড়ানো বিষয়ে সাংবাদিক সালাউদ্দীন আহমেদের ছোট ভাই এমরান আলী বলেন, আমার ভাই কোন মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করেননি। তিনি সঠিক তথ্যই তুলে ধরেছেন। এই মামলায় তাকে ফাঁসানো হয়েছে।