নওগাঁ বিসিকের ২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজস্বের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
রিফাত হোসাইন সবুজ, জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ
প্রকাশিত: সোমবার ১০ই অক্টোবর ২০২২ ০৬:৪১ অপরাহ্ন
নওগাঁ বিসিকের ২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজস্বের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

বিসিক শিল্পনগরী নওগাঁর শিল্প প্লটের রাজস্ব উত্তোলন করে সরকারি কোষাগারে জমা না দেওয়ার আভিযোগ উঠেছে বিসিক জেলা কার্যালয়ের উপ-ব্যবস্থাপক শামীম আক্তার মামুন ও শিল্পনগরী কর্মকর্তা মো.ওয়াসিম সরকার এর বিরুদ্ধে। এছাড়া প্রতি মাসে বিসিকের অফিসে প্লটের আনুসাঙ্গিক সার্ভিস চার্জের টাকা দেয়ার জন্য উদ্যোক্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন বিসিকের এই দুই কর্মকর্তা। 


কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী উদ্যোক্তারা প্লট ভাড়া,সার্ভিস চার্জ, ভূমি উন্নয়ন করসহ আনুসাঙ্গিক টাকা বিসিক কার্যালয় থেকে চালান ফরম সংগ্রহ করে সরাসরি বিসিকের নির্দিষ্ট ব্যাংক একাউন্টে জমা দিবেন। সেই নিয়মের তোয়াক্কা না করে বিসিকের কর্তকর্তারা এক উদ্যোক্তার কাছে থেকে টাকা নিয়ে সেই টাকা ব্যাংকে দেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তারা বলছেন ব্যাংকে জমা দেয়া হয়েছে। তবে রশিদ দেয়া হয়নি উদ্যোক্তাকে।


অনুসন্ধান করতে গিয়ে বিসিক শিল্প নগরীর অধীন্যাস্থ বাবু ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ এর উদ্যোক্তা মো. বাবুর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, গত ২৫ সেপ্টেম্বর (রবিবার) আমি শিল্পনগরী কর্মকর্তা মো.ওয়াসিম সরকারকে মোট ১লাখ টাকা দিয়েছি। তারা সরাসরি আমার কাছে থেকে চেয়েছে, যার কারনে আমি ব্যাংকে জমা না দিয়ে বিসিকের অফিসে গিয়ে জমা তাকে জমা দিয়েছি।


ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার রশিদ কি আপনাকে দিয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না এখনও টাকা জমার রশিদ আমাকে দেয়নি। কয়েকদিন পর নাকি দিবে।


শিল্পনগরী কর্মকর্তা মো.ওয়াসিম সরকার এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বাবু ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ এর সার্ভিস চার্জ, ভূমি উন্নয়ন করসহ আনুসাঙ্গিক বাবদ সর্বমোট ১লাখ টাকা বাঁকি ছিল। সেই টাকা নিয়ে ব্যাংকে জমা দেয়া হয়েছে। জমা দেয়ার রশিদ দেখতে চাইলে তিনি বলেন, আপনি মোসবারের দিকে অফিসে আসলে দেখাতে পারবো। জমার রশিদ এখনও কেন উদ্যোক্তার কাছে দেননি এমন প্রশ্নের কোন স্ব উত্তর দিতে পারেননি তিনি।


বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক শামীম আক্তার মামুন এর সাথে মেবাইল ফোনে কথা হলে তিনি উল্টো উদ্যোক্তাদের উপর দোষ চাপিয়ে বলেন, অনেক উদ্যোক্তা অফিস থেকে চালান রশিদ নিয়ে গিয়েও বিসিকের ব্যাংক একাউন্টে টাকা জমা করতে দেরি করে। যার কারনে হয়তো তিনি অফিসে এসে আমাদের জমা দিয়ে গেছেন টাকা। 


তাহলে ১৫দিন আগে টাকা আপনাদের কাছে দিয়ে গেছে তবুও তাকে কেন এখন পর্যন্ত টাকা জমার রশিদ দেয়া হলোনা তাকে। এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি কেউ অভিযোগ করে তবে আমরা খতিয়ে দেখবো। আর আপনি যে অভিযোগ তুলেছেন আমি খোঁজ নিয়ে জানাচ্ছি বলে পরে আর কোন যোগাযোগ করেননি। তাকে ফোন করা হলেও রিসিভ করেননি। 


জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি নওগাঁ জেলা শাখার সভাপতি নুরুল মমিনুল ইসলাম বলেন, বিসিক শিল্প নগরীর অধীনে যে সব শিল্প কারাখানার উদ্যোক্তারা আছেন তারা সরাসরি বিসিকের ব্যাংক একাউন্টে টাকা জমা করবেন। এটাই নিয়ম। বিসিকের কর্মকর্তারা কখনো সরাসরি প্লট ভাড়া, সার্ভিস চার্জ, ভূমি উন্নয়ন করসহ এসব বাবদ টাকা নিতে পারবেননা। শুধু পানি বিলটা নিতে পারবেন। আর কোন উদ্যোক্তাদের সরাসরি গিয়ে কিভাবে বলেন মাসে মাসে তাদের অফিসে গিয়ে টাকা দিতে হবে। এটা অনিয়ম এবং অন্যায়। টাকা আতœসাতের জন্যই এমনটা করছে তারা। আর যদি টাকা জমা করেই থাকেন বিসিকের কর্মকর্তারা তাহলে কেন এখনও বাবু ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ এর মালিককে জমার রশিদ দেয়া হলোনা। পরে  জমা করাটাও নিয়ম বহির্ভূত কাজ।