ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২: আ.লীগের ৩ স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রার্থীতা প্রত্যাহার, কপাল খুলছে বহিস্কৃত সাত্তারের

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার ১৪ই জানুয়ারী ২০২৩ ০৭:৫৬ অপরাহ্ন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২: আ.লীগের ৩ স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রার্থীতা প্রত্যাহার, কপাল খুলছে বহিস্কৃত সাত্তারের

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগের তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী সরে দাঁড়ালেন। শনিবার (১৪ জানুয়ারি) জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে এই তিন প্রার্থী তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। 


জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহগীর আলম তিন প্রার্থীর প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা প্রার্থীরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন মঈন ও আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু।


জানা যায়, শুক্রবার জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রার্থীদের এক বৈঠকে নির্বাচন থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য  প্রার্থীদের নিরুৎসাহিত করা হয়। এসময় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হওয়া সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকারসহ দলের কয়েকজন সিনিয়র নেতা উপস্থিত ছিলেন।


তবে একটি সূত্র জানায়, বৈঠকে উপ-নির্বাচনের এক বছর পরই সেখানে হওয়া পরবর্তী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে হলে যেন প্রার্থীরা সিদ্ধান্ত মেনে নেন সে বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেয়া হয়। মূলত উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়াকে কেন্দ্র করেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের সরে যাওয়া। এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে উকিল আব্দুস সাত্তার কিংবা অন্য প্রার্থী জয়ী হলে সেক্ষেত্রে দলীয় কৌশল বাস্তবায়ন হবে, যেটি কেন্দ্রীয় নির্দেশনা।


এ অবস্থায় আসনটিতে কপাল খুলতে যাচ্ছে পদত্যাগ-পরবর্তী বহিষ্কার হওয়া বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা ও সাবেক ৫ বারের এমপি উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়ার। সংসদ থেকে বিএনপির পদত্যাগকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে সাত্তারকে সরকার নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছিল।


তবে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে সেখানে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ৩ প্রার্থী অংশগ্রহণ করায় দলের নেতাকর্মীদের মাঝে বিভক্তির সৃষ্টি হচ্ছিল। এ অবস্থায় দলীয় বিভক্তি রুখতে ওই তিন জনকে নির্বাচনে অংশ নিতে নিরুৎসাহিত করা হয়। তারা তাদের সম্পূর্ণ স্বাধীন সিদ্ধান্তে কোনো রকম চাপ ছাড়াই তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন।


মনোনয়ন প্রত্যাহারের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু বলেন, আমি স্বল্প সময়ের জন্য এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছি। তবে আগামী নির্বাচনের জন্য আমি প্রস্তুতি নিব।


জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন বলেন, অল্প সময়ের জন্য এমপি হয়ে যেহেতু মানুষের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন করতে পারব না। তাই আমি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছি। আমি মানুষের আস্থা এবং ভালোবাসা হারাতে চাই না।


আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাহান আলম সাজু জানান, অল্প সময়ের জন্য আমি উপ নির্বাচনে অংশ নিতে চাচ্ছি না। তাই মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছি। আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।


উল্লেখ্য, সম্প্রতি বিএনপির হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তে গত ১১ ডিসেম্বর উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করলে এ আসনটি শূন্য হয়। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি এ আসনে উপনির্বাচন হবে। সরকারি দল আওয়ামী লীগ এ আসনটিতে তাদের দলীয় মনোনয়ন না দিয়ে উন্মুক্ত ঘোষণা করে।


এদিকে ভোটের আগে বেশ আলোচনায় আসেন বিএনপি থেকে পদত্যাগ করা পাঁচবারের সংসদ সদস্য ৮৪ বছর বয়সী আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া। দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে পদত্যাগ করে ক্ষোভে দল থেকে পদত্যাগ করেন। তার নামে কেনা হয় মনোনয়নপত্র। এর পরপরই তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। সর্বশেষ জেলা বিএনপিসহ সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপি তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে।


সরাইল উপজেলার নয়টি ইউনিয়নে মোট ভোটার দুই লাখ ৩৭ হাজার ১৫৩ জন। আশুগঞ্জ উপজেলার আটটি ইউনিয়নে ভোট সংখ্যা এক লাখ ৩২ হাজার ৯৭০টি।