কামিল মু’মিন হওয়ার জন্য তরীকা মশকের কোন বিকল্প নেই: ছারছীনার পীর ছাহেব

নিজস্ব প্রতিবেদক
সাখাওয়াত জামিল সৈকত (অতিথি লেখক)
প্রকাশিত: শুক্রবার ১৭ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:১০ অপরাহ্ন
কামিল মু’মিন হওয়ার জন্য তরীকা মশকের কোন বিকল্প নেই: ছারছীনার পীর ছাহেব

আমীরে হিযবুল্লাহ ছারছীনা শরীফের পীর ছাহেব আলহাজ্ব হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ (মা.জি.আ.) জুময়ার নামাজ শেষে সমবেত জনতাকে তওবা পড়িয়ে বাইয়াত করিয়ে আলোচনা করেন। তিনি তার ভক্ত মূরীদানকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকীদায় সুদৃঢ় বিশ্বাস স্থাপনের পাশাপাশি নিয়মিত তরীকা মশক করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন এবং ভবিষ্যতে আমলী জিন্দেগী গঠন করার প্রতি উৎসাহিত করেন। কারণ একজন কামিল মু’মিন হওয়ার জন্য তরীকা মশকের কোন বিকল্প নেই।


গতকাল দক্ষিণ বঙ্গীয় সর্ববৃহৎ ইসলামী সমাবেশ বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলাধীন আমড়াগাছিয়া হুসাইনপুরস্থ খানকায়ে ছালেহিয়া কমপ্লেক্সে আয়োজিত তিনদিনব্যাপী বার্ষিক ঈছালে ছাওয়াব মাহফিলের শেষ দিন বাদ জুময়া আখেরী মুনাজাতের পূর্বে প্রধান অতিথির আলোচনায় একথা বলেন। 


বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের পার্শ্বে প্রায় একশত একর অখন্ড বিশাল জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত আমড়াগাছিয়া খানকায়ে ছালেহিয়া কমপ্লেক্সে তিন লক্ষাধিক লোক পবিত্র জুময়ার নামাজে অংশগ্রহণের জন্য আশেপাশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা হতে বাস-ট্রাক, নসিমন, অটোরিক্সা, মটরসাইকেল রিজার্ভ করে উপস্থিত হয়। এতে মহাসড়কের প্রায় তিন কিলোমিটার পর্যন্ত জ্যাম হয়ে থাকে। জুময়ার নামাজে ইমামতি করেন ছারছীনা দরবার শরীফের ভবিষ্যত কর্ণধার বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহর সিনিয়র নায়েবে আমীর ও ছারছীনা দারুচ্ছুন্নাত জামেয়া-ই-নেছারিয় দীনিয়ার সম্মানিত রঈস আলহাজ্ব হযরত মাওলানা শাহ্ আবু নছর নেছারুদ্দীন আহমদ হুসাইন। 


জুময়ার নামাজের পর বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহর আমীর হযরত পীর ছাহেব কেবলার পক্ষে সিনিয়র নায়েবে আমীর আলহাজ্ব হযরত মাওলানা শাহ্ আবু নছর নেছারুদ্দীন আহমদ হুসাইন বলেন- আমরা কোন দলীয় রাজনীতি করিনা তার মানে এই নয় আমরা ইসলাম চাইনা। আজ বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ইসলাম থেকে বিচ্ছিন্ন করার এক সূক্ষ¥ পায়তারা চলছে। ডারউইনের মতবাদ দিয়ে এই দেশের ৯৫% মুসলমানের হৃদয়ে আঘাত হেনেছে যা কোন মুসলমানই মেনে নেয়নি। আমরা সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছি ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক এই সকল বই সাময়িক বাতিল করলে চলবে না, সম্পূর্ণভাবে বাতিল করে পুনরায় ছাপিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌছাতে হবে। আমাদের দাবী আমরা করে যাবো, আমরা কখনো রাস্তাঘাট অবরোধ, ভাংচুর করিনা এবং করবোনা। 


মাহফিলের ২য় দিন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মোঃ আফজাল হোসেন, তিনি বলেন- আমরা দক্ষিণ বঙ্গের মানুষ বংশানুক্রমে ছারছীনা দরবার শরীওফের সাথে সম্পৃক্ত। তিনি দেশ মাতৃকার কল্যাণে ছারছীনা দরবার শরীফের গৃহীত ঐতিহাসিক কয়েকটি অবদানের কথা তুলে ধরে বলেন, ছারছীনা দরবার শরীফ সর্বদাই পজিটিভ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে। এটা প্রমাণিত সত্য।  


পরিশেষে হযরত পীর ছাহেব কেবলা আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন। এতে লাখো লাখো মুসুল্লি অশ্রুসিক্ত নয়নে নিজ নিজ গোনাহরাশী মাফ চেয়ে রোনাজারী করতে থাকে। এ সময়ে সমবেত জনতার আমীন ¦ামীন ধ্বণীতে আকাশ বাতাস ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে। মুনাজাতে হযরত পীর ছাহেব কেবলা দেশবাসীর সার্বিক কল্যাণ কামনা করেন ও সাম্প্রতিক তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে শাহাদত বরণকারীদের জন্য দোয়া কামনা ও আহত এবং ক্ষতিগ্রস্থ সকলের রহমত ও হেফাজত কামনা করেন।