সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি পদে দায়িত্ব না নিতে ব্যারিস্টার খোকনকে চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার ২৭শে মার্চ ২০২৪ ০৫:৪৫ অপরাহ্ন
সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি পদে দায়িত্ব না নিতে ব্যারিস্টার খোকনকে চিঠি

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ নির্বাচনে বিএনপি প্যানেল থেকে নির্বাচিত হলেও দায়িত্বভার না নিতে ব্যারিস্টার এ এম মাহবুবউদ্দিন খোকনসহ চার আইনজীবীকে চিঠি দেয়া হয়েছে। বুধবার (২৭ মার্চ) খোকন ছাড়াও মো. শফিকুল ইসলাম, মিসেস ফাতিমা আক্তার ও সৈয়দ ফজলে এলাহী অভিকে এই চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।


চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘বিগত ৬ ও ৭ মার্চ ২০২৪ অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে আপনারা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম মনোনীত প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বিগত দু’বছরের মতো এবারের নির্বাচনেও ক্ষমতাসীনরা নজিরবিহীনভাবে ভোট জালিয়াতি, কারচুপি ও মনগড়া ফলাফল ঘোষণা করেছে। এমনকি সম্পাদক পদে আওয়ামী লীগ দলীয় দু’জন প্রার্থী, প্রথমে নাহিদ সুলতানা যুথী ও পরে শাহ মন্জুরুল হককে তথাকথিত বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ক্ষমতাসীন দলের বহিরাগত সন্ত্রাসীরা নির্বাচনের অব্যবহিত পরে ৮/০৩/২০২৪ প্রত্যূষে সমিতির অডিটোরিয়ামে হামলা চালিয়ে আইনজীবীদেরকে মারধর ও ব্যালট পেপার ছিনতাই করে নিয়ে যায়।’


ওই ঘটনা আওয়ামী লীগের দু’জন সম্পাদক পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘটিত হলেও সরকারের একজন বেতনভুক্ত আইন কর্মকর্তা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ও আরও তিনজন আইনজীবী ফোরাম নেতাকে আসামি করে গত ৯ মার্চ শাহবাগ থানায় একটি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।


এতে আরও বলা হয়, আপনারা জানেন, নির্বাচন কমিশনে দায়িত্ব পালনকারী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওসমান চৌধুরী ও উক্ত নির্বাচনে সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজলকে যথাক্রমে গত ৯ ও ১০ মার্চ উপরোল্লিখিত সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট মামলায় গ্রেপ্তার করে তাদের যথাক্রমে ৩ দিন ও ৪ দিন ডিবি অফিসে রিমান্ডে নেয়া হয়। তারা উভয়েই দু’সপ্তাহ কারাভোগ করেছেন। তাদেরকে কারাগারে রেখে গত ১০ মার্চ লুট হয়ে যাওয়া ব্যালট পেপার গণনার নাটক সাজিয়ে তথাকথিত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। যে নির্বাচনে আমাদের পুরো প্যানেলেরই বিজয় সুনিশ্চিত ছিল, সেখানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতি জায়েজ করতে আপনাদের নামকাওয়াস্তে বিজয়ী দেখানো হয়েছে।’


চিঠিতে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম জানায়, বিজ্ঞ আইনজীবী সমাজ ও দেশের আপামর জনগণ নির্বাচনের এই ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ইতোমধ্যে আমাদের সভাপতি পদপ্রার্থী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার এ এম মাহবুবউদ্দিন খোকন পুনর্নির্বাচন দাবি করেছেন। যা দেশের সকল গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। উপরোক্ত সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে গত ২৪ মার্চ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র কেন্দ্রীয় নেতা, উপদেষ্টামন্ডলী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি/সম্পাদকদের এক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ৬ ও ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের পর গত ১০ মার্চ ঘোষিত ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনঃনির্বাচনের দাবিতে ন্যায়সংগত যৌক্তিক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।


এর পরিপ্রেক্ষিতে চিঠিতে চার আইনজীবীকে দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, আপনি/আপনারা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২০২৫ এর মেয়াদকালের দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন। দল আশা করছে, আপনি/আপনারা দলের দায়িত্বশীল নেতা হিসেবে দলীয় এই সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে পালন করবেন।