হিলিতে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠেছে মহিষের খামার

নিজস্ব প্রতিবেদক
গোলাম রব্বানী, উপজেলা প্রতিনিধি হিলি (দিনাজপুর)
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১১ই জুন ২০২৪ ০৬:৩০ অপরাহ্ন
হিলিতে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠেছে মহিষের খামার

দরজায় উঁকি দিচ্ছে মুসলিম সম্প্রদায়ের বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। এই ঈদকে সামনে রেখে সীমান্তবর্তী দিনাজপুরের হিলিতে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠেছে মহিষের খামার। কোরবানি উপলক্ষে অস্ট্রেলিয়া ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশের মহিষ মোটাতাজা করা হয়েছে খামারে। মহিষের খামার বেশ লাভজনক। বিশেষজ্ঞদের মতে প্রোটিনের একটি অংশ আসে মহিষ থেকে। খামারের মাধ্যমে সহজে যে কেউ স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারবে বলে জানান, হাকিমপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।


হাকিমপুর হিলি পৌর শহরের চুড়িপট্রি  (ক্যাম্প পট্টিতে) মা হাজেরা বিবি এগ্রো ফার্ম নামে খামারটি গড়ে তুলেছেন স্থানীয় যুবক সুমন মিয়া। কোরবানির জন্য খামারটিতে মোটাতাজা করা হচ্ছে ১৩৮টি মহিষ। এর মধ্যে বুলডোজার নামে একটি মহিষের ওজন ১ হাজার ৩০০ কেজি। আর বিগবস নামে আরেকটি মহিষের ওজন ১ হাজার ১০০ কেজি। দুটি মহিষের দাম ধরা হয়েছে ৫ থেকে সাড়ে ৫ লাখ টাকা। ভারত থেকে অবৈধ পথে মহিষ আমদানি না হলে ভালো লাভবান হওয়ার আশা খামারি সুমন মিয়ার। 


খামারে মহিষ দেখতে আসা শাজাহান মিয়া বলেন, শুনেছি সীমান্তবর্তী হিলিতে মহিষের খামার গড়ে উঠেছে। তাই আমরা নওগাঁ থেকে হিলিতে মহিষ কিনতে এসেছি। হিলি শহর সীমান্তের জিরো পয়েন্ট ঘুরে দেখলাম খুব ভালো লেগেছে। যদি দরদামে মিলে যায় তাহলে দুই-চারটা মহিষ কিনে নিয়ে যাব।

খামারের জনৈক শ্রমিক বলেন, আমাদের হিলিতে মহিষের খামার গড়ে উঠায় আমরা খুব খুশি। এখানে আমাদের কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। আমরা খামারের মহিষ গুলোকে খুব যত্ন করি, নিয়মিত গোসল, খাবার ও পরিচর্যা করে থাকি।আর এখান থেকে মাস শেষে যে মাইনা পাই তা দিয়ে আমাদের সংসার চলে। 


খামারি সুমন মিয়া বলেন, ছোটবেলা থেকেই পশুপাখি পালনে বেশ আগ্রহ ছিল। তাই চাকরি বা ব্যবসা না করে গরু-ছাগল লালন-পালন শুরু করেছিলাম। গরুর খমারে লোকসান হওয়ায় সেটি থেকে বেরিয়ে এসে মহিষের খামার গড়ে তুলেছি। মহিষের রোগবালাই অনেকটা কম হয়। তবে গো-খাদ্যের যে দাম, তাতে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। তবে সরকার যদি ভারত থেকে গরু, মহিষ আসা বন্ধ করে, সেক্ষেত্রে আমরা ভালো দাম পাব বলে আশা করছি। 


হাকিমপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ কাজী মাহাবুর রহমান বলেন, হিলিতে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে মহিষের খামার গড়ে উঠেছে। প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে নিয়মিত খামারটি পরিদর্শন করা হচ্ছে। খামারিকে সব ধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কীভাবে মহিষগুলো মোটাতাজা করা হবে সে সম্পর্কে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। খামারটি সম্প্রসারণ করতে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে। অন্য কেউ যদি মহিষের খামার গড়ে তুলতে চায়, সেক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।