লালপুরে রের্কড পরিমান জমিতে বাঙ্গী চাষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ আশিকুর রহমান টুটুল, জেলা প্রতিনিধি, নাটোর
প্রকাশিত: রবিবার ১লা মে ২০২২ ০৬:১০ অপরাহ্ন
লালপুরে রের্কড পরিমান জমিতে বাঙ্গী চাষ

রমজান মাসে ইফতারিতে পুষ্টিকর ও ঠান্ডা খাবার হিসেবে পরিচিতি রয়েছে বাঙ্গীর। বাঙ্গী সাধারণত শীতের দুই মাস বাদ দিয়ে সারা বছরই উৎপাদিত হয় তবে গ্রীষ্মে বেশি ভাল হয়।বাঙ্গী মাত্র তিন মাসের ফসল। এটা পতিত জমি ও সাথি ফসল হিসেবেও চাষ হয়ে থাকে। বাজারে চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় এবং কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় নাটোরের লালপুরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বাঙ্গীর চাষ। 


আগে বাণিজ্যিক ভাবে বাঙ্গীর চাষ তেমন না হলেও এবার লালপুরে ১২ হেক্টর জমিতে বাঙ্গীর চাষ হয়েছে। অনুকুল আবহাওয়া ও তেমন রোগবালাই না থাকায় চলতি মৌসুমে বাঙ্গীর বাম্পার ফলন হবে বলে জানিয়েছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ। এছাড়াও বাজারে বাঙ্গীর সঠিক দাম পেলে বাঙ্গী চাষীরা লাভের মুখ দেখবেন বালে জানান কৃষকরা। 


লালপুর উপজেলা কৃষি অফিস বলছে,‘এর আগে লালপুরে বাণিজ্যিক ভাবে বাঙ্গীর চাষ তেমন হয়নি। গত বছর ২হেক্টর জমিতে বাঙ্গীর চাষ হয়েছিলো। এবার ১২ হেক্টর জমিতে বাঙ্গীর চাষ হয়েছে। যা রের্কড পরিমান। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার বাঙ্গীর বাম্পার ফলন হবে বলে জানান কৃষি বিভাগ।’ 


সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাঙ্গীর ক্ষেত ঘুরে দেখা যায়, মাঠ জুরে বাঙ্গীর চাষ হয়েছে। সবুজ বাঙ্গীর গাছে জমি ভরে আছে। গাছের ডগায় ডগায় ধরে আছে সবুজ রঙের বাঙ্গী। কিছু কিছু জমিতে বাঙ্গী পাকা ধরেছে। প্রথম রমাজনেই বাজারে মিলবে লালপুরের বাঙ্গী। এজন্য প্রায় বাঙ্গী চাষীই জমি পরিচর্র্যায় দারুন ব্যস্থ সময় পার করছেন। 


শত ব্যস্থ দেখেও কথা হয় বাঙ্গী চাষী মোস্তফা বায়েজিদ কাদেরে সঙ্গে তিনি বলেন, ‘রমজানে বাঙ্গীর চাহিদা বেশি থাকায় রমজান মাসকে মাথায় রেখে তিনি এবার ২বিঘা জমিতে বাঙ্গীর চাষ করেছেন। বাঙ্গী ৩ মাসের ফসল। প্রতি বিঘা জমিতে বাঙ্গী চাষ করতে জমি প্রস্তুত থেকে এখন পর্যন্ত তার ৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।


 বাজারে চাহিদা ও দাম ভালো পেলে প্রায় ২৫-৩০ হাজার টাকার বাঙ্গী বিক্রয় হবে বলে জানান তিনি। তিনি আরো জানান, ‘লালপুরের বাঙ্গী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রয় হয়। এজন্য পাইকাররা এসে জমি থেকে বাঙ্গী কিনে নিয়ে যায়। অন্য ফসলের মতো বিক্রয়ের জন্য চিন্তা করতে হয়না। 


রোগবালাইও খরচ কম হওয়ায় মৌসুমী ফসল হিসেবে বাঙ্গী চাষে আগ্রহী হচ্ছে এ অঞ্চলের কৃষকরা।’


ওয়ালিয়া গ্রামের বাঙ্গী চাষী রনি আহম্মেদ বলেন, ‘গত বার তিনি ১০ কাঠা জমিতে বাঙ্গী চাষ করেছিলেন। এবার তিনি ১ বিঘা জমিতে বাঙ্গী চাষ করেছেন। অনুকুল আবহাওয়া হওয়ায় এবং পোকার উপদ্রব কম থাকায় বাঙ্গীর বাম্পার ফলন হবে। বাজারে বাঙ্গীর দাম ভালো থাকলে তিনি লাভের মুখ দেখবেন বলে জানান।’


লালপুর উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম জানায়,‘বাঙ্গী একটি লাভজনক মৌসুমী ফসল। লালপুরে এর আগে বাঙ্গীর তেমন চাষ হয় নি। উৎপাদন খরচ অন্য ফসলের চেয় কম হওয়ায় এবং বর্তমানে বাজারে বাঙ্গীর দাম ও চাহিদা বেশি থাকায় লালপুরের বাঙ্গী চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। 


এছাড়াও বাঙ্গী চাষে কৃষকদের সকল প্রকার সহযোগিতা করতে মাঠ পর্যয়ে কাজ করছে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা।’