কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর জয়মনিরহাট ইউনিয়নের একটি বিলের মাঝে বাঁধ দেওয়ায় প্রায় ২০০ বিঘা জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে আমন ধান চাষের সময় শেষ হয়ে এলেও শতাধিক কৃষক ওই জমিতে আমনের চারা রোপণ করতে পাচ্ছেন না। জলাবদ্ধতা নিরসন করতে তারা ভূরুঙ্গামারী থানা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, জয়মনিরহাট ইউনিয়নের ভেরভেরি বিলের পানি বাউশমারী বিল হয়ে বকনী নদীতে গিয়ে পড়ে। হবিবর রহমান ও শাহাদত হোসেন নামের দুই ব্যক্তি ভেরভেরি বিল ও বাউসমারী বিলের মাঝে বাঁধ দিয়ে পুকুর তৈরি করেন। এতে ভেরভেরি বিলের পানি নেমে যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। পানি বের হয়ে যাওয়ার পথ না থাকায় সেখানকার প্রায় ২০০ বিঘা জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে কৃষকরা আমনের চারা রোপণ করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন।
কৃষক মোখলেছুর রহমান, যোবায়ের হোসেন ও শরিফুল আলমসহ অন্য কৃষকরা জানান, বাঁধ দেওয়ার কারণে বিলের পানি বেরিয়ে যেতে পারছে না। এতে আমনের চারা লাগানো যাচ্ছে না। ধান লাগাতে না পারলে না খেয়ে মরতে হবে।
বিধবা মালেকা বেগম আকুতি ভরা কন্ঠে বলেন, দুই বিঘা জমি এখনও পানির নিচে। এক গোছা ধান লাগাতে পারি নাই। ধান না লাগালে পেটে পাথর বান্দি থাকা লাগবে।
বাঁধ নির্মাণকারী হবিবর রহমান বলেন, ধান ও মাছ চাষের জন্য বাঁধ দিয়েছি। ইউপি চেয়ারম্যানের পরামর্শে পানি নিস্কাশনের জন্য পুকুরের পাড়ের নিচ দিয়ে পাইপ বসাতে সম্মত হয়েছি। কিন্তু পরে তারা আর যোগাযোগ করেনি।
জয়মনিরহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, বাঁধ নির্মাণের সময় বাঁধ নির্মাণকারীরা পাইপ বসানোর জায়গা রেখে বাঁধ নির্মাণের কথা দিয়েছিল। পরবর্তীতে তারা কথা রাখেননি। বাঁধ দেওয়ার ফলে শতশত বিঘা জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপক কুমার দেব শর্মা জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর সমস্যাটি সামাধানের জন্য উপজেলা কৃষি অফিসারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। যতদুর জানি বিষয়টির সমাধান হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শাহ মোঃ আপেল মাহমুদ জানান, উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তাসহ আমরা উভয় পক্ষকে ডেকে সমাধানের চেষ্টা করেছি কিন্তু সমাধান করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করা হয়েছে।
ভূরুঙ্গামারী থানার ওসি রুহুল আমিন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তিন দফায় ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।