প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১৭:২
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় পুরনো টায়ার পুড়িয়ে জ্বালানি তেল ও কালি তৈরির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার ধামাইনগর ইউনিয়নের বাকাই এলাকায় আবাদি জমিতে গড়ে ওঠা এ কারখানার বিষাক্ত ধোঁয়া ও দুর্গন্ধে হুমকিতে পড়েছে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা বাস, ট্রাক ও মোটরসাইকেলের টায়ার এনে এখানে আগুনের তাপে গলিয়ে তেল ও কালি তৈরি করা হচ্ছে। টায়ার পোড়ানোর সময় উৎপন্ন কালো ধোঁয়া বাতাসের সঙ্গে মিশে আশপাশের গাছপালা, পুকুর ও জমিতে ছড়িয়ে পড়ছে। এর ফলে নষ্ট হচ্ছে ফসল, ঝরে যাচ্ছে ফুল ও ফল, আর পুকুরের পানি দূষিত হয়ে মারা যাচ্ছে মাছ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কারখানার ধোঁয়া ও কালি ধানের পাতায় জমে ফসলের ক্ষতি করছে। অনেক পুকুরে মাছ মারা গেছে। এমনকি মানুষ শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগসহ নানা সমস্যায় ভুগছে। পরিবেশের এমন বিপর্যয়ের কারণে তারা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
কৃষক সোবহান আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পুকুরে মাছের ডিম দেওয়া হলেও বিষাক্ত পানিতে সব মরে গেছে। এলাকাবাসীর প্রতিবাদে আগে কারখানাটি বন্ধ হলেও কিছুদিন আগে আবার চালু হয়েছে। তিনি বলেন, রাস্তার অবস্থাও খারাপ, দুর্গন্ধে মানুষ চলাচল করতে পারে না।
আরেক কৃষক সুরেশ চন্দ্র মাহাতো বলেন, মাঠে কাজ করতে গেলেই দুর্গন্ধে বমি চলে আসে। শ্রমিকরা মাঠে কাজ করতে চায় না। বাধ্য হয়ে জমি কম দামে বর্গা দিতে হচ্ছে। পানিতে নামলে চর্মরোগ হচ্ছে, আর ধানের ফলনও কমে যাচ্ছে।
কারখানার ম্যানেজার স্বপন শেখ জানান, পুরনো টায়ার পুড়িয়ে ফার্নেস ওয়েল ও কালি তৈরি করা হয়, যা বিভিন্ন শিল্পকারখানায় ব্যবহার হয়। কালি ইটভাটায় বিক্রি করা হয়। তবে অনুমোদনের বিষয়ে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার কথা বলেন।
রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হুমায়ূন কবির জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। অপরদিকে সিরাজগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. তুহিন আলম বলেন, এ ধরনের কারখানাকে কোনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি, তবে অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এভাবে অনুমোদনহীনভাবে টায়ার পোড়িয়ে তেল ও কালি উৎপাদন অব্যাহত থাকলে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।