প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৫, ২১:১৫
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। তিনি বলছেন, ঘোষিত ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না।
মঙ্গলবার রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে জাতীয় যুব সম্মেলনে পাটওয়ারী এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘যদি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হয়, তাহলে যারা দেশের জন্য রক্ত দিয়েছেন তাদের লাশ ফেরত দিতে হবে এই সরকারকে।’ তাঁর কথায়, যারা শহীদ হয়েছেন সংস্কারের জন্য, তাদের প্রতি ন্যায়বিচার এবং সংস্কারের কাজ শেষ না হলে নির্বাচন প্রক্রিয়া গ্রহণযোগ্য হবে না।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভাইয়ের হাত চলে গেছে, যদি সংস্কার কাজ শেষ না হয় এবং তবেই নির্বাচন হয়, তাহলে সরকারকে সেই ভাইয়ের হাত ফিরিয়ে দিতে হবে। মায়ের বুক খালি হয়েছে, ওই সন্তানের ফেরত দিতে হবে।’ এই বক্তব্যে তিনি রাজনৈতিক সংস্কার ও গণহত্যার বিচারের গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
জীবনের এই কথা বলা সময় যুব সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি এবং জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তারা সকলে এই নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সূচি নিয়ে আলোচনা করেন এবং দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার উন্নয়নে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
এদিকে, বিএনপি এবং অন্যান্য প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। জামায়াতও ওই সময়ে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনায় আপত্তি জানায়নি। তবে এনসিপি বরাবরই নির্বাচন আয়োজনের পূর্বে দেশের রাজনৈতিক সংস্কার এবং জুলাই গণহত্যার বিচারের দাবি উচ্চারণ করে আসছে।
এই দ্বন্দ্বের মধ্যে নির্বাচন শৃঙ্খলা ও জনগণের আস্থা ফেরানোর জন্য যে সকল পদক্ষেপ নিতে হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন এখনো ঐকমত্যে আসতে পারেনি। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে রাজনৈতিক পরিবেশ ও সরকারের পদক্ষেপই নির্বাচনের বাস্তব সময়সূচি নির্ধারণ করবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নির্বাচন এবং তার প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা এখন গুরুত্বপূর্ণ এক প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে, যেখানে জনমত এবং রাজনৈতিক দলের অবস্থান সমান গুরুত্বপূর্ণ। ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের ভবিষ্যত কতটা সফল হবে, সেটাই এখন দেশের সাধারণ মানুষের চোখে মুখে অপেক্ষার বিষয়।