প্রকাশ: ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬:৪৬
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে খাগড়াছড়ি পৌরসভার নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। টানা ভারী বর্ষণে চেঙ্গি নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে গিয়ে শত শত ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পানিতে ডুবে যায়। এতে বহু পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এবং গৃহস্থালির জিনিসপত্রের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
শনিবার রাত থেকে পানছড়ি ও আশপাশের এলাকায় প্রবল বর্ষণের পর এ বন্যা দেখা দেয়। খাগড়াছড়ি শহরের নিচের বাজার, মেহেদীবাগ, গঞ্জপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
নিচের বাজারের ব্যবসায়ী আবুল হোসেন জানান, সকালে দোকানে এসে তিনি দেখেন পানি দোকানের ভেতরে প্রবেশ করেছে। অল্প সময়ে মালপত্র সরিয়ে নিতে না পারায় তার দোকানের পণ্য নষ্ট হয়ে যায়। একইভাবে মেহেদীবাগ এলাকার সোহেল রানা বলেন, হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় আসবাবপত্রসহ নানা জিনিসপত্র নষ্ট হয়েছে এবং পুরো এলাকাটি পানিতে ডুবে গেছে।
এদিকে এ আকস্মিক বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন পানছড়ির কালানাল এলাকার মৎস্যচাষি আনোয়ার হোসেন। তিনি প্রায় ৮ একর জমিতে ১১টি পুকুরে মাছ চাষ করছিলেন। এর মধ্যে কার্পজাতীয় মাছ, পাঙ্গাস ও মনোসেক্স তেলাপিয়া মজুদ ছিল, যেগুলো বাজারজাত করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
কিন্তু বর্ষণের পানির চাপ সামলাতে না পেরে ১০টি পুকুরের বাঁধ ভেঙে যায়। এতে প্রায় ৫০ লাখ টাকার মাছ ভেসে যায়। আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন এবং এই ক্ষতির পর কিভাবে ঘুরে দাঁড়াবেন বুঝতে পারছেন না।
শুধু আনোয়ার হোসেন নন, আরও অনেক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও কৃষকও এ বন্যায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।
খাগড়াছড়ি পৌরসভার প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানা জানান, দুর্গতদের সহায়তা প্রদানে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতির সঠিক হিসাব করতে কাজ চলছে এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর বর্ষাকালে পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয় এ অঞ্চল। তবে এবারের ক্ষতি আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সরকারি সহায়তার অপেক্ষায় রয়েছে।